কয়েক মিনিটেই তছনছ ময়নাগুড়ি, ঠিক কী হয়েছিল উত্তরবঙ্গে? জানুন
এই সময় | ০২ এপ্রিল ২০২৪
মিনি টর্নেডো! তাতেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। কেন এমন বিধ্বংসী ঝড়? আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস ছিল? সাধারণ কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়? জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।কী হয়েছিল উত্তরবঙ্গে?
স্বল্পস্থায়ী কিন্তু তীব্র ঝড়। অনেকটা দূর থেকে দেখা গিয়েছিল ফানেলের মতো আকার নিয়ে কালো মেঘের কুণ্ডলী ঘুরতে ঘুরতে ধেয়ে আসছে।
কেন এমন হলো?
উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিলই। সেই আবহ এমন ‘মিনি টর্নেডো’ রূপ ধারণ করে।
কী ভাবে তৈরি হলো মিনি টর্নেডো?
আবহবিদরা জানাচ্ছেন, বায়ুমণ্ডলের উপরের ও নীচের স্তরে বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ বিপরীতমুখী হলে এবং ওই দুই স্তরের বায়ুপ্রবাহের গতিতে বড়সড় ফারাক তৈরি হলে এই ধরনের টর্নেডো তৈরি হয়। তীব্রতা এবং আকার অনুযায়ী একে টর্নেডো বা মিনি টর্নেডো বলা হয়। বর্তমানে বিহার থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত একটা নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত থাকার ফলে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প উত্তরবঙ্গের দিকে যাচ্ছে। এরই প্রভাবে সেখানকার বিভিন্ন জায়গায় কোথাও কালবৈশাখী, কোথাও ঝড়, কোথাও মিনি টর্নেডো তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
কালবৈশাখীর থেকে ময়নাগুড়ির ঘটনা আলাদা কোথায়?
ময়নাগুড়ির আকাশে যে মেঘ দেখা গিয়েছিল তা অনেকটাই নীচে নেমে এসেছিল। মেঘের স্তর এতটাই নীচে ছিল যে ঘুরতে থাকা বাতাসের ওপরের প্রান্ত ওই মেঘ এবং অন্য প্রান্তটি মাটিতে ঠেকে যায়। কালবৈশাখীতে সাধারণত এমন হয় না।
আবার কি এমন হতে পারে?
কালবৈশাখীর মতোই টর্নেডোর ক্ষেত্রেও অনেকটা আগে থেকে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে উত্তরবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির আবহ রয়েছে। ফলে এমন আবারও হতে পারে।
জলপাইগুড়ি জেলা ছাড়াও আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলায় বিভিন্ন এলাকায় ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলপাইগুড়িতে এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ঘটনার দিন রাতেই জলপাইগুড়ি উড়ে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও তাঁর নির্বাচনী প্রচার কাটছাঁট করে জলপাইগুড়িতে যেতে পারেন। ইতিমধ্যে পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে।
ঝড়ের কারণে জলপাইগুড়ি শহর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ির বিভিন্ন এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। আলিপুরদুয়ার- ১ ব্লকের চকোয়াখেতি, তপসিখাতা এলাকায় বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি, কোচবিহার জেলার মরিচবাড়ি খোল্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুডুমারি, দলদলি, মরিচবাড়ি, খোচাবাড়ি এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডবের কারণে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানতে পারা গিয়েছে।