ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকতেই পারে, আমাকে চেনার সুযোগ দিতে হবে: সায়ন্তিকা...
আজকাল | ০২ এপ্রিল ২০২৪
রিয়া পাত্র অভিনয় জগতের চেনা মুখ। রাজনীতিতে পা দিয়েই প্রার্থী। বাঁকুড়ার আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে খুব অল্প মার্জিনে পরাজয়। তারপরেও মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন। আশা ছিল লোকসভা ভোটের টিকিট পাবেন। না পেয়ে অভিমান প্রকাশ। এবং তার কিছুদিন পরেই আবার দলের তরফে ভোট লড়ার টিকিট। এবার বরানগর উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী। ঠাসা প্রচারসূচির মাঝেই বাঁকুড়া টু বরানগরের জার্নি নিয়ে কথা বললেন সায়ন্তিকা ব্যানার্জি।* রাজনীতিতে আপনার জার্নি বাঁকুড়া টু বরানগর। বাঁকুড়াকে কতটা মিস করছেন ?সায়ন্তিকা: ভাল রকম। বলা যায় অনেকটা। ওখানকার সকলের সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক হয়েছিল। * লোকসভা ভোটে টিকিট পাননি বলে হতাশ হয়েছিলেন, অভিমান করেছিলেন। সেসব নিয়ে জোর চর্চা...সায়ন্তিকা: অভিমানের জায়গা একটা হয়েছিল। আমার মনে হয়েছিল, আমি হেরে গিয়েও মাটি কামড়ে পড়ে ছিলাম।ওখান থেকে জিতে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। * বিধানসভা ভোট আর লোকসভা ভোট সম্পূর্ণ আলাদা পরিসর। লোকসভার টিকিট আশা করেছিলেন...সায়ন্তিকা: আমি বাঁকুড়া লোকসভার ৭টা বিধানসভা ঘুরে কাজ করছিলাম। কেন টিকিট পাইনি তার পিছনে অনেক বিষয় থাকে। হয়ত আমি ৩ বছরের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারছি না। দলের অনেক অভিজ্ঞ লোকজন রয়েছেন, তাঁরা হয়ত এমন কিছু দেখছেন, যেটা আমি দেখতে পাইনি। অভিমান হয়েছিল, যেমন বাবা মায়ের ওপর হয়। আমি দলত্যাগের কথা তো ভাবিনি।* এবার বলুন, বিধানসভার টিকিটে বেশি খুশি, নাকি লোকসভার টিকিট পেল আরও বেশি খুশি হতেন?সায়ন্তিকা: লোকসভা লক্ষ্য ছিল। কিন্তু খুশির কথা ভাবতে গেলে বারবার দুঃখ পাব। কাজ করে যেতেই হবে। বিধানসভা টিকিট পেয়ে খুশি।* পেলেন এমন একটা কেন্দ্র, সেখান থেকে লম্বা সময় জ্যোতি বসুর মতো মানুষ জিতেছেন। এই ইতিহাস কি আপনার জন্য টেনশন তৈরি করছে?সায়ন্তিকা: টেনশন নয়, দায়িত্ব বেশি। বাঁকুড়া আমার কাছে অন্য জায়গা। আমার রাজনীতির শুরু সেখানে। ১০ বছর পরেও আমি ওই জায়গার তুলনা করব না অন্য কোনও জায়গায় সঙ্গে। কিন্তু বরানগর আমার জন্য একটা বড় সুযোগ, রাজনীতির ক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার।* বরানগরে প্রার্থী নিয়ে দলেই ক্ষোভ বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে...সায়ন্তিকা: আমি আমার কাজের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। আমার হাতে ২ মাস সময় আছে। আমি এই সময়টায় মানুষের এত কাছে আসব, যাতে কারো ক্ষোভ না থাকে। * বাঁকুড়ায় ৩ বছর পড়ে থাকা কি এটার উত্তর?সায়ন্তিকা: একেবারেই। সেখানে হেরে গিয়েও পড়ে ছিলাম, জিতে তো বরানগরে থাকবই। আমি সল্টলেকের মেয়ে। তবু এখানে বাড়ি নিয়ে থাকব। সকলের কাছাকাছি থাকতে পারব। * আগের বিধায়ক তাপস রায়, তৃণমূল থেকে জিতে দল বদলে ফেলেছেন। আপনি সেই প্রতীকেই ভোট লড়ছেন, চ্যালেঞ্জ বাড়ল কি?সায়ন্তিকা: না, উনি দলের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেছেন। মা মাটি মানুষের সরকারের প্রকল্পে কাজ করেছেন। উনি একটা মাধ্যম ছিলেন। পরে উনি ব্যক্তিগত পছন্দে অন্য দলে গেছেন। আমি আমার দলের প্রতিনিধি।* প্রচারের রূপরেখা তৈরি? সায়ন্তিকা: সেই আলোচনা হচ্ছিল। আমার ৩৮ ওয়ার্ড, ২৫২ বুথ, ২ লক্ষের বেশি ভোটার। আমার হাতে সময় আছে। আমি প্রতিটি মানুষের বাড়ি পৌঁছে যেতে চাই। * প্রচারে কী বার্তা?সায়ন্তিকা: আমি শিল্পী সায়ন্তিকা হিসেবে তো বার্তা দিচ্ছি না। আমি দলের প্রতিনিধি, মমতা ব্যানার্জির প্রতিনিধি।* দুদিনে প্রচারে কী বুঝলেন, সমর্থন কতটা? সায়ন্তিকা: দেখুন, ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকতেই পারে।তবে আমাকে চেনার সুযোগ দিতে হবে। অভিনেত্রীরাও রক্ত মাংসের মানুষ। * অভিনেত্রী ইমেজটাই কি আপনার ইউএসপি?সায়ন্তিকা: আমাদের একটাই ইউএসপি, মমতা ব্যানার্জি এবং তাঁর উন্নয়ন। আমি দু"দিনের প্রচারে দেখেছি, বয়স্ক মানুষেরা বলেছেন, মমতা ব্যানার্জি যেখানে, সেখানে আমরা আছি। * শেষ দুই নির্বাচনের মার্জিন থেকে আপনি কতটা এগিয়ে থাকবেন বলে মনে করছেন? সায়ন্তিকা: তাপস রায় ৩৫ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। আমি ৪০-৪৫ হাজার মার্জিনে জিতব। * বিপক্ষে সজল ঘোষ সম্পর্কে কী বলবেন?সায়ন্তিকা: আমি বিরোধীদের নিয়ে বলতে চাই না। আমাদের দলের একটাই অ্যাজেন্ডা, মানুষের উন্নয়ন। * ভোটে জিতে বরানগরের মানুষের জন্য প্রথম কোন কাজ করবেন?সায়ন্তিকা: এখনই বলব না। কারণ বললে মিথ্যে বলা হবে। এখানে কাজ হয়েছে অনেক। সবে দু"দিন হয়েছে, মানুষের সঙ্গে, সংগঠনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব আগে। কী প্রয়োজন জানতে হবে। তার পরেই করা। সেটা স্কুল, জল, ভেন্ডিং মেশিন যা প্রয়োজন, এমএলএ ল্যাড থেকে করব।* এই ভোটে জিতে গেলে, দায়িত্ব বাড়বে। প্রয়োজনে সিনেমা থেকে সরতে হতে পারে?সায়ন্তিকা: আমার বাঁকুড়া উদাহরণ। হেরে গিয়েও ঐ পরিস্থিতিতে সব করেছি। আমি এখানে রোজগার করতে আসিনি। কিন্তু আমাকে সংসার চালাতে কাজ করতে হবে, টাকা লাগবে। পেশা পেশার জায়গায়, দায়িত্ব দায়িত্বের জায়গায়।