নিরুফা খাতুন: গার্ডেনরিচ (Garden Reach) বিপর্যয়ের রেশ কাটেনি এখনও। তারই মাঝে কলকাতায় ভেঙে পড়ল বাড়ির দেওয়াল! মুচিপাড়ার রামকানাই অধিকারী লেনের একটি বাড়ি ভাঙার কাজ চলছিল। সেই কাজের মধ্যেই পাশের একটি বাড়ির দেওয়াল ধসে পড়ে। প্রচণ্ড কাঁপুনি আর ধুলোয় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। পাশের আরও কয়েকটি বাড়িতেও ফাটল দেখা গিয়েছে। বিষয়টি বোঝার পরই প্রাণ বাঁচাতে তড়িঘড়ি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। অভিযোগ, নিয়ম না মেনে বাড়িটি ভাঙা হচ্ছিল, সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, এদিন মুচিপাড়া (Muchipara) এলাকার রামকানাই অধিকারী লেনের একটি পুরনো বাড়ি ভাঙা হচ্ছিল। স্থানীয়দের দাবি, বাড়িটি সম্প্রতি প্রোমোটিংয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে। প্রোমোটারের নিযুক্ত কর্মীরাই বাড়িটি ভাঙছিলেন। মঙ্গলবার সকালে তার মধ্য়েই প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে পাশের বাড়ির কমন দেওয়ালটি ভেঙে পড়়ে। ওই বাড়ির লোকজন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এক মহিলার কথায়, ?আমি রান্না করছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড ধুলোয় ঢেকে গেল চারপাশ। কিছু বুঝতে পারছিলাম না। তার পর বেরিয়ে দেখলাম, এই দেওয়ালটা ভেঙে পড়েছে। প্রচণ্ড ভয় লেগে গেল।? স্থানীয় বাসিন্দা এক তরুণী জানাচ্ছেন, আমরা প্রচণ্ড ভীত। এটা নিয়ে বার বার পুলিশকে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিসলর (Councilor) বিশ্বরূপ দে। তিনি জানান, এক মাস আগে যখন ওই বাড়িটি ভাঙার কাজ চলছিল, সেসময় পাশের কয়েকটি বাড়ির বাসিন্দারা তাঁকে গিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, প্রোমোটার যেন তাঁদের জানিয়ে বাড়ি ভাঙার কাজ করে। নইলে আশেপাশের বাড়ির লোকজনের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তা জানানো হয়নি এবং আজকের এই বিপর্যয়। কাউন্সিলরের দাবি, ওয়ার্ডবাসীর সমস্যার কথা জানতে পারলে তিনি ১ ঘণ্টার মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করেন। এবারও তাই করবেন।
উল্লেখ্য, মধ্য কলকাতার এই এলাকায় বাড়ি ভাঙার ঘটনা নতুন নয়। এর আগে মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ চলাকালীন বউবাজারে বাড়ি ভেঙে পড়েছিল। সম্প্রতি গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে পাশের বসতিতে। প্রাণ হারান ১২ জন। আর তার পর রামকানাই অধিকারী লেনের দুর্ঘটনা। সুরক্ষা নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এদিন কাউন্সিলরের সামনেই তাঁরা ক্ষোভ উগরে দেন।