প্রচারে গিয়ে রোগী দেখছেন বহরমপুর লোকসভার বিজেপি প্রার্থী তথা পেশায় চিকিৎসক নির্মল সাহা। বাড়ির দরজায় চিকিৎসককে দেখে কেউ হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন, কেউ আবার শারীরিক পরামর্শ নিচ্ছেন। কোথাও আবার বিজেপি প্রার্থী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা কোনও ব্যক্তিকে নিজেই বাড়িতে গিয়ে দেখছেন। প্রেসক্রিপশন লিখে পরামর্শ দিচ্ছেন। পরিস্থিতি এমনই, যে প্রচারে বেরিয়ে রোগী দেখার চাপে ভোট চাওয়ার একপ্রকার ফুরসৎই পাচ্ছেন না তিনি। এই প্রসঙ্গে নির্মল সাহা বলেন, 'একসময় রোগীরা আমার কাছে যেতেন। আজ আমি রোগীদের কাছে এসে বুঝতে পারছি ওঁরা কত কষ্ট করে বহরমপুর আসতেন ডাক্তার দেখাতে।'বহরমপুর লোকসভা আসন গত ২৫ বছর নিজের দখলে রেখেছেন মুর্শিদাবাদের তথাকথিত 'রবিনহুড' অধীর চৌধুরী। এবার অধীর চৌধুরীকে লড়তে হচ্ছে একাধারে জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অলরাউন্ডার ইউসুফ পাঠান ও জেলার পরিচিত চিকিৎসক মুখ নির্মল সাহার বিরুদ্ধে। তাই এই কেন্দ্রে এবার ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার সমীকরণই উঠে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, যে প্রার্থীই জিতুন না কেন, ফাইট হবে নেক টু নেক। অর্থাৎ বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে ফাঁকা মাঠে জয় এবার কোন প্রার্থীর পক্ষেই সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে প্রচারের ময়দানে এগিয়ে থাকাও ভোটে জেয়র ক্ষেত্রে বয়ড়সড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রচারের মাঝেই স্বাস্থ্য পরীক্ষাবিজেপি এই কেন্দ্রে সবার আগে প্রার্থী ঘোষনা করেছে। প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে নির্মল সাহার নাম। প্রচারে নেমে ইতিমধ্যেই মানুষের মন জয়ের চেষ্টাও শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। রোজ চায়ের আড্ডায় জনসংযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় হেঁটেও প্রচার সারছেন প্রার্থী। আর প্রচারে যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই চিকিৎসক প্রার্থীকে ঘিরে জমে যাচ্ছে ভিড় ভিড়। অনুরোধ আসছে একবারটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখার। কাউকেই হতাশ করছেন না নির্মল সাহা।
বাড়িতে গিয়ে দেখলেন রোগিনীকেরেজিনগর বিধানসভা এলাকার বিকলনগরে প্রচারে গিয়ে জানতে পারেন গ্রামের বাদিন্দা অর্চনা মণ্ডল দীর্ঘদিন রোগ শয্যায় পড়ে রয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে ঢুকে রোগীর বিছানার পাশে বসে নাড়ি পরীক্ষা শুরু করে দেন তিনি। নিজেই রোগীর চিকিৎসার রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখেন। মাথায় রক্তক্ষরণের জেরে অর্চনা মণ্ডলের শরীরের বাঁদিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রেসক্রিপশানও লিখে দেন তিনি। সঙ্গে দেন কিছু পরামর্শও।একইসঙ্গে নির্বাচন মিটে গেলে অর্চনাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করার দায়িত্বও নিজের কাঁধেই তুলে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে প্রার্থীর কাছ থেকে। চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে গ্রামের মানুষ উচ্ছ্বসিত। অর্চনার স্বামী বিপুল মণ্ডল বলেন, 'তিনি বিজেপি প্রার্থী নন, আমাদের কাছে ভগবান।'
অন্যদিকে প্রচারপর্ব সেরে সাংবাদিকদের সামনে অধীর চৌধুরীকে নিশানা করে নির্মল সাহা বলেন, 'পাঁচবারের সাংসদ, তার মানে তাঁকে হারান যাবে না এটা কোনও কথা নয়। ৩৫ বছরের বামফ্রন্টকেও সরতে হয়েছে। পাঁচবারের সাংসদ এটা যোগ্যতার মাপকাঠি হতে পারে না।'