কল্যাণী এইমসে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ, বড় চক্রের হদিশ হুগলিতে
এই সময় | ০৩ এপ্রিল ২০২৪
চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা চক্রের একাধিক উদাহরণ উঠে আসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এবার কল্যাণী এইমসে চাকরি করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা চক্রের হদিশ মিলল। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর জাল নথি, মোবাইল এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি গাড়ি। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণী এইমস-এ চাকরি দেওয়ার নাম করে ৭২ লাখ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪ জনকে গ্ৰেফতার করেছে হরিপাল থানার পুলিশ। আজ হরিপাল থানায় হুগলি জেলা গ্ৰামীনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃশানু রায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, এই প্রতারণা চক্রে আরও অনেকে যুক্ত আছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন আগে হরিপালের বাসিন্দা শিবনাথ দে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের তদন্ত নেমে প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত থাকা বাপ্পা রাউত নামে এক ব্যক্তিকে প্রথমে পাকড়াও করা হয়। নদিয়ার কল্যাণী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত মাসের ১৯ তারিখ বাপ্পা রাউতকে আদালতে তুলে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেন হরিপাল থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
এই চক্রের সঙ্গে জড়িত দীপক দাস নামে আরও এক ব্যক্তিকে দুর্গাপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও দুই প্রতারকের খোঁজ পায় পুলিশ। এমডি বাসার হ্যাপি ও সুপ্রিয় বিশ্বাস নামে দু’জনকে তমলুক ও রানাঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে বাপ্পা রাউত জেল হেফাজতে আছে। বাকি তিন অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তদন্তে আরও অগ্ৰসর হচ্ছেন তদন্তকারি আধিকারিকরা। অভিযুক্তদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে নিয়োগপত্র সম্পর্কিত বেশ কিছু জাল নথি, এইমস এর ভুয়ো পরিচয় পত্র, দুটি মোবাইল সহ একটি চার চাকার গাড়ি।
হুগলি জেলা গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃশানু রায় বলেন, ‘এটা একটা বড় চক্র। চারজন ছাড়াও এতে আরো অনেকে জড়িত আছে। তাদের খোঁজ চলছে।’ তিনি জানান, এখনো অবধি ৭২ লাখ টাকার প্রতারণা সামনে এসেছে। সারা ভারতবর্ষ জুড়ে এদের নেট ওয়ার্ক আছে।।বাকি সমস্ত কিছু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
অভিযোগকারী হরিপালের বাসিন্দা শিবনাথ দের দাবি, গ্ৰেফতার হওয়া অভিযুক্ত দীপক দাসের সাথে ২০২১সালে পরিচয় হয় হরিপালের একটি চায়ের দোকানে। নিজেকে সরকারী বড় অফিসার বলে পরিচয় দিত। নীল বাতি গাড়ি নিয়ে আসত। এরপরে অভিযুক্ত কল্যাণী এইমস্ রাজ্যের শিক্ষা বন্ধু দফতর সহ একাধিক দফতরে চাকরি করিয়ে দেওয়ার টোপ দিতে থাকে। তার কথা মতো পরিবারের একাধিক ব্যক্তির চাকরির জন্য তাকে ৭২ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এইমস্ এর নিয়োগপত্র, পরিচয় পত্র, মেডিক্যাল, ট্রেনিং সমস্ত কিছু করানো হয়। কিন্তু পরে জানা যায় যে সবাই প্রতারিত হয়েছেন। এরপর তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।