এই সময়: লোকসভার বর্তমান সদস্যদের ৪৪ শতাংশের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা। এমন সাংসদের সংখ্যা ২২৫। ওই ২২৫ জনের ৫০ শতাংশের কিছু বেশি বিজেপির। এমনই তথ্য সম্বলিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) নামে সংস্থা। গত লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের পেশ করা হলফনামা থেকে সংস্থাটি ওই সব তথ্য পেয়েছে। ফৌজদারি বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত সাংসদদের ২৯ শতাংশের বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, খুনের চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ।আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত সব কেন্দ্রে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তবে ফৌজদারি মামলায় গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, এমন সাংসদদের কেউ কেউ এ বারও টিকিট পেয়েছেন। এডিআর-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, লোকসভার বর্তমান সদস্যদের মধ্যে ২২৫ জন ঘোষণা করেছেন যে, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা এখন বিচারাধীন। তাঁদের মধ্যে আবার ১৪৯ জন হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে রুজু হওয়া ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
গুরুতর বলতে খুন, খুনের চেষ্টা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট, অপহরণ এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ। এডিআর-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট ৯ জন সাংসদ খুনের মামলায় অভিযুক্ত। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন বিজেপির এবং এক জন করে কংগ্রেস, বিএসপি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের। সেই সঙ্গে এক জন নির্দল সাংসদের বিরুদ্ধেও রয়েছে খুনের অভিযোগ।
সাংসদদের বিরুদ্ধে অন্যান্য গুরুতর অভিযোগের মধ্যে রয়েছে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত সাংসদের সংখ্যা ১৬। আবার তাঁদের তিন জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় অর্থাৎ ধর্ষণের মামলা চলছে। এডিআর-এর রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, বিজেপি সাংসদদের মধ্যে ১১৮ জনের বিরুদ্ধে চলছে ফৌজদারি মামলা। আবার তাঁদের মধ্যে ৮৭ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন।
কংগ্রেসের ৪৬ জন সাংসদের মধ্যে ২৬ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামল চলছে, ওই ২৬ জনের মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ। তা ছাড়া, ডিএমকে-র ২৪ জন সাংসদের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে চলছে ফৌজদারি মামলা এবং তাঁদের ৭ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে রুজু হওয়া ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। বাংলার শাসক দল তৃণমূলের ১৯ জন সাংসদের মধ্যে ৮ জন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত। তাঁদের ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। ডেডিইউ-এর ১৬ জন সাংসদের মধ্যে ১২ জনের মধ্যে ফৌজদারি মামলা চলছে।
নির্বাচন কমিশনকে জমা দেওয়া সাংসদদের হলফনামা অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের ৪১ জন সাংসদের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা। ওই গোত্রের অপরাধে অভিযুক্ত সাংসদের সংখ্যার নিরিখে উত্তরপ্রদেশের পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে ৪৬ জন সাংসদের মধ্যে ২৫ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। তার পর বাংলা। এই রাজ্যের ৪২ জন সাংসদের মধ্যে ২৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। তবে ২০১৪ সালে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত সাংসদের সংখ্যা কিছুটা বেশিই (২৩৩) ছিল। আবার ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত সাংসদের সংখ্যা বেড়েছে ৪৪ শতাংশ।