• মায়াঙ্কের গতিতে কেঁপে গেল RCB-র টপ অর্ডার, ঘরের মাঠে টানা ২ ম্যাচ হার কোহলিদের
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৩ এপ্রিল ২০২৪
  • ফের মায়াঙ্ক যাদবের দাপট, আরও একটি জয় লখনউ সুপার জায়ান্টসের। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার নিজেদের ঘরের মাঠে চিন্নাস্বামীতে পরপর দুই ম্যাচে হারের মুখে পড়ল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। মায়াঙ্কের গতিতেই এদিন আরসিবি-ব্যাটারদের নাভিশ্বাস ওঠে। রজত পাতিদার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ক্যামেরন গ্রিন- তিন প্রধান ব্যাটারকেই সাজঘরের পথ দেখান মায়াঙ্ক। সেখানেই কিন্তু আরসিবি-র কোমর ভেঙে যায়। ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাদের ইনিংস শেষ হয় ১৫৩ রানে। ২৮ রানে জয় ছিনিয়ে নেয় কেএল রাহুলের এলএসজি।

    এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ করেনি এলএসজি। তারা ৫.৩ ওভারেই প্রথম উইকেটে ৫৩ রান করে ফেলেছিল। কিন্তু রাহুল এদিনও উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২টি ছয়ের হাত ধরে ১৪ বলে ২০ করে সাজঘরে ফেরেন কেএল। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে মায়াঙ্ক ডাগরের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তিনে ব্যাট করতে নেমে, এদিন ফের ব্যর্থ হন দেবদূত পাডিক্কালও। মহম্মদ সিরাজের ডেলিভারিতে ১১ বলে ৬ করে অনুজ রাওয়াতের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পাডিক্কাল। তবে স্কোরবোর্ডকে সচল রেখেছিলেন কুইন্টন ডি'কক। মার্কাস স্টোইনিসের সঙ্গে যখন তিনি ভালো পার্টনারশিপ করার পথে, সেই সময়ে ফের ধাক্কা খায় লখনউ। ২টি ছক্কা এবং ১টি চারের সৌজন্যে ১৫ বলে ২৪ করে সাজঘরে ফিরে যান স্টোইনিস। ম্যাক্সওয়েলের বলে ক্যাচ ধরেন ডাগর।

    এর পর ৫৬ বলে ৮১ রানের দুরন্ত একটি ইনিংস খেলে আউট হয়ে যান কুইন্টন ডি'ককও। ৫টি ছয় এবং ৮টি চার রয়েছে তাঁর এই ইনিংসে। রিস টপলির বলে ক্যাচ ধরেন মায়াঙ্ক ডাগরই। এদিন চিন্নাস্বামীতে আরসিবি-র বিরুদ্ধে ডি'ককও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে নিজের তিন হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ৩১ বছর বয়সী তারকা এই কৃতিত্বটি অর্জন করেছেন তাঁর ৯৯তম আইপিএল ম্যাচে। ডি'কক আউট হলেও, নিকোলাস পুরান ঝড় তুলে লখনউকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন। ১৯তম ওভারে তিনটি, আর ২০তম ওভারে ২টি ছক্কার হাত ধরে, শেষ দুই ওভারে পুরানোর সৌজন্যে এলএসজি-র ঝুলিতে আসে ৩৩ রান। লখনউ সুপার জায়ান্টস নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে করে ১৮১ রান। ২১ বলে ঝোড়ো ৪০ করে অপরাজিত থাকেন পুরান। ক্রুনাল ক্রিজে এলেও, একটি বলও খেলেননি। এছাড়া যশ দয়ালের বলে শূন্য করে আয়ুশ বাদোনি আউট হন। তাঁর ক্যাচ ধরেন ফ্যাফ ডু'প্লেসি।

    আরসিবি-র হয়ে সবচেয়ে ভালো বল করেছেন ম্যাক্সওয়েল। ৪ ওভার বল করে ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন তিনি। এছাড়া রিস টপলি, যশ দয়াল, মহম্মদ সিরাজ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

    জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ৪২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় আরসিবি। ৪.২ ওভারে এম সিদ্ধার্থের বলে কোহলি ক্যাচ তোলেন। বিরাটের দুরন্ত ক্যাচটি ধরেন দেবদূত পাডিক্কাল। ১টি ছয় ২টি চারের হাত ধরে ১৬ বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন বিরাট কোহলি। এর পর ৫.১ ওভারে ফ্যাফ ডু'প্লেসিকে ডাইরেক্ট হিটে রানআউট করেন পাডিক্কাল। ১৩ বলে ১৯ করে সাজঘরে ফেরেন আরসিবি অধিনায়ক। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এদিন ফের ব্যর্থ হন। ২ বল খেলে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। মায়াঙ্ক যাদবের বলে নিকোলাস পুরান ক্যাচ ধরেন ম্যাক্সির।

    রজত পতিদার সেই সময়ে কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি সঙ্গত করার মতো কাউকেই পাননি। ক্যামেরন গ্রিন ৯ বলে ৯ করে মায়াঙ্কের বলে বোল্ড হন। ২১ বলে ১১ রান করে অনুজ রাওয়াতও সাজঘরে ফেরেন। স্টোইনিসের বলে তাঁর ক্যাচ ধরেন পাডিক্কাল। রজত পতিদারও এর পর ২১ বলে ২৯ করে মায়াঙ্ক যাদবের বলেই পাডিক্কালের হাতে ক্যাচ দেন। এদিন ব্যাট হাতে পাডিক্কাল কিছু করতে না পারলেও, দুরন্ত ফিল্ডিং করেন। তাঁর জন্য কিন্তু লখনউ এই ম্যাচে বেশ লাভবান হয়।

    সাতে নেমে মহিপাল লোমরোর কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন। ৩টি করে চার এবং ছয়ের হাত ধরে ১৩ বলে ৩৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু আর কেউ দলের হাল ধরার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। দীনেশ কার্তিক (৮ বলে ৪), মায়াঙ্ক ডাগর (১ বলে ০), রিস টপলিরা (৬ বলে অপরাজিত ৩) কিছুই করে উঠতে পারেননি। মহম্মদ সিরাজ তাও ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৮ বলে ১২ রান করেছিলেন। ১৯.৪ ওভারে ১৫৩ রানে শেষ হয়ে যায় আরসিবি-র ইনিংস।

    লখনউয়ের বোলারদের মধ্যে সেরা পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে মায়াঙ্কের। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। ৩.৪ ওভার বল করে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন নবীন-উল-হক। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন এম সিদ্ধার্থ, যশ ঠাকুর, মার্কাস স্টোইনিস।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)