• নজরে চিংড়ি রপ্তানির ব্যবসা, ১১ বছরে ১৩৭ কোটি লেনদেন শাহজাহানের! হদিশ পেল ইডি
    প্রতিদিন | ০৩ এপ্রিল ২০২৪
  • অর্ণব আইচ: ১১ বছরে শেখ শাহজাহানের ১৩৭ কোটি টাকার লেনদেনের হদিশ পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। যে পথে শাহজাহান সন্দেশখালিতে জমি ও ভেড়ি দখলের বিপুল কালো টাকা সাদা করেছিল, তার হদিশ চালাচ্ছেন ইডির গোয়েন্দারা। সেই তদন্তেই উঠে এসেছে শাহজাহানের সহযোগী একটি সংস্থার নাম।

    ওই সংস্থাটি বিদেশে চিংড়ি রপ্তানি করে। সেই সূত্র ধরেই শাহজাহানের (Sk Sahajahan) মেয়ের সংস্থা এসকে সাবিনার সঙ্গে কলকাতার ওই সংস্থাটির বিপুল টাকার লেনদেন হয়। ওই সংস্থার দুই কর্মকর্তার নামও উঠে এসেছে ইডির তদন্তে। তাঁদের ইতিমধ্যেই ইডি জেরা করেছে। সেই তদন্তের পরই ইডির দাবি, ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শাহজাহানের সঙ্গে সংস্থাটির দু’ দফায় ১০৪ কোটি ও ৩৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। মোট লেনদেনের পরিমাণ ১৩৭ কোটি। এ ছাড়াও ২০২১ ও ২২ সালে আরও ৩১ কোটি ২০ লাখ টাকার লেনদেনের হদিশও মিলেছে। ভেড়ি ও জমি দখল করে নিজেদের লোকেদের দিয়ে মাছ ও চিংড়ি চাষ করাত শাহজাহান। এর পর সে বাধ‌্য করত সেই চিংড়ি নিজের মেয়ের সংস্থা তথা আড়তের মাধ‌্যমে বিক্রি করতে। সেই যাবতীয় চিংড়ি শাহজাহান ফের বিক্রি করত ওই সংস্থাটিকে। ওই সংস্থার কর্তারা ইডিকে জানান, এই চিংড়ি কেনাবেচার জন‌্য শাহজাহান তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করত। নিজের প্রভাবও খাটাত। এই বিপুল টাকার লেনদেনের মাধ‌্যমে কালো টাকা সাদা করা হয়েছিল কি না, ইডির গোয়েন্দারা সেই তথ‌্য জানার চেষ্টা করছে।

    এদিকে, শাহজাহানের সংস্থা ও তাঁর সহযোগী সংস্থাটির দুই চার্টার্ড অ‌্যাকাউন্ট‌্যান্টকে তলব করে জেরা করেছে ইডি। সোমবার ইডি শেখ শাহজাহানকে গ্রেপ্তারির পর নিজেদের হেফাজতে নেয়। মঙ্গলবার শাহজাহানের এক সহযোগী মইদুল মোল্লাকে তলব করে ইডি আধিকারিকরা দু’জনকে মুখোমুখি জেরাও করেন। মইদুল দাবি করেছিলন যে, শাহজাহান বৈঠক করে চিংড়ি ব‌্যবসায়ীদের ‘নির্দেশ’ দিয়েছিল, যাবতীয় চিংড়ি তার মেয়ের আড়তে বিক্রি করতে। সেই তথ‌্য যাচাই করতে ইডি দু’জনকে জেরা করে।

    ইডির (ED) সূত্র জানিয়েছে, মধ‌্য কলকাতার বউবাজার থানা এলাকায় রয়েছে ওই সংস্থাটির অফিস। সংস্থাটি বহু বছর আগে গাড়ির যন্ত্রাংশের ব‌্যবসা করত। ক্রমে চিংড়ি রপ্তানির ব‌্যবসা শুরু করার পর সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় শাহজাহানের। ইডি জেনেছে, গত কয়েক বছরে চিংড়ি রপ্তানিতে ৪০০ কোটি টাকারও বেশি ব‌্যবসা করে সংস্থাটি। এমনকী, এর জন‌্য সংস্থাটিকে পুরস্কৃতও করা হয়। ইডির দাবি, চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণের জন‌্য ওই সংস্থাটির চারটি কারখানা রয়েছে। সেখানে চিংড়ির মাথা ও অংশ বাদ দিয়ে সেগুলিকে বরফজাত করা হয়। এর মধ্যে অন্তত দু’টি কারখানা শেখ শাহজাহানই তৈরি করে। সেগুলি বউবাজারের ওই সংস্থাটিকে ব‌্যবহার করতে দেয় শাহজাহান। চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ ও তা বিদেশে রপ্তানি করেও ভেড়ি ও জমি দখলের বিপুল পরিমাণ কালো টাকা শাহজাহান সাদা করেছে, এমনই দাবি ইডি। ইডি জেনেছে, সম্প্রতি মান খারাপ হওয়ার কারণে বিদেশে রপ্তানি হওয়া বেশ কিছু চিংড়ি বাতিল হয়ে দেশে ফিরে আসে। সেই চিংড়ি বিভিন্ন উপায়ে শাহজাহান নিজের প্রভাব খাটিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। এই তথ‌্য যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইডি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)