গর্ভপাত হওয়ার কথা একজনের, হল অন্যজনের! ভাষার সমস্যা বলে দায় ঝাড়ল হাসপাতাল
এই সময় | ০৩ এপ্রিল ২০২৪
রুটিন চেকআপ করাতে হাসাপাতালে গিয়েছিলেন চার মাসের অন্তঃতস্ত্বা বিদেশিনি এক মহিলা। তবে চেকআপ আর করানো হল না। উল্টে নিজের গর্ভস্থ সন্তানকে হারালেন ওই মহিলা। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ইউরোপের প্রাগ শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। অভিযোগ, ঘটনার জন্য দায়ী হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সরা। অন্য একজনের পরিবর্তে ওই বিদেশীনির গর্ভপাত চিকিৎসকরা করিয়েছেন। ঘটনার পর নিজেদের দোষ ঢাকতে তরুণীর ভাষাকেই দায়ী করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।হাসপাতালে রুটিন চেক আপ করাতে আসা তরুণীর ভাষা নাকি বুঝতে পারেন নি চিকিৎসকেরা। কোন ভাষায় তিনি কথা বলছেন সেটাই নাকি বোধগম্য হয়নি তাঁদের। আর এই বোঝার ভুলের কারণেই গর্ভপাত করিয়েছেন চিকিৎসকেরা। উল্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাল্টা দাবি করেছে, যে গর্ভপাতের সময় বাধা দেননি তরুণীও।
গর্ভস্থ সন্তানকে হারিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন তরুনী। সূ্রের খবর, তিনি ইউরোপের বাসিন্দা নন। অন্য দেশ থেকে এসেছেন। তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে প্রাগে থাকতে শুরু করেন। এর আগেো তিনি ওই হাসপাতালে যান শারীরিক পরীক্ষার জন্য। আগে তিন বার তাঁর শারীরিক পরীক্ষা হয়। প্রত্যেকবরের মত সেদিনও ওই তরুণী হাসপাতালে অপেক্ষা করছিলেন চিকিৎসকের জন্য। সূত্রের খবর, একজন নার্স তাঁকে ভিতরে ডেকে নিয়ে যান। ভেতরে গিয়ে নার্সের নির্দেশ অনুযায়ী হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পড়েন তিনি। সেখানে সেইসময় দুজন চিকিৎসকও উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে একটু খটকা লাগলেও প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে ভেবে আর কিছু বলেননি তিনি। চিকিৎসকেরা তাঁকে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি এরপর আর কিছুই মনে নেই তরুণীর।
জ্ঞান ফেরার পর তিনি বুঝতে পারেন গর্ভপাত করা হয়েছে তাঁর। কিন্তু ততক্ষণে সব কিছুই শেষ হয়ে গেছে। ওই একইদিনে অন্য আরেকজন তরুণীর গর্ভপাত করার কথা ছিল। তবে তিনি হাসপাতালে আসতে দেরি করায় বুঝতে ভুল হয়েছে বলে সাফাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উল্টে তরুণীর ভাষাকে দায়ী করেছে। ভাষা না বোঝারকারণে এতোবড় ভুল হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ঘটনাটি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এই ভয়াবহ ভুলের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে। কীভাবে এতো বড় ভুল হলো তার জন্য শুরু হয়েছে তদন্ত। চেক সোসাইটি ফর কোয়ালিটি ইন হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডেভিড মার্কস, এই ধরণেরঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না হয় তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষনের উপর জোর দিয়েছেন।