এই সময়, কলকাতা ও বসিরহাট: আশঙ্কাই সত্যি হলো। চিংড়ি-ব্যবসার আড়ালে শেখ শাহজাহানের টাকা আত্মসাতের পরিমাণ এক লাফে ছাড়িয়ে গেল একশো কোটির অঙ্ক। সন্দেশখালিতে জমি-ভেড়ি হাতানোর কাজে ঘনিষ্ঠদের ব্যবহার করেছিলেন শাহজাহান, তেমনই আবার আমদানি-রপ্তানী ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কারবারীদের সাহায্য নিয়েছিলেন তিনি।যে সব ব্যবসায়ী সন্দেশখালির বেতাজ বাদশার কথা শুনতেন না, প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের কারবার বন্ধের হুমকি দেওয়া হতো বলে অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজন ব্যবসায়ী এ বিষয়ে শাহাজাহানের বিরুদ্ধে বয়ানও দিয়েছেন বলে ইডি সূত্রে খবর। তাঁদের বয়ানেই সামনে এসেছে বিপুল অঙ্কের প্রতারণার ঘটনা।
জেলে গিয়ে শোন অ্যারেস্ট করার পরে গত সোমবার ভেড়ি-জমি দখলের মামলায় ইডি বিশেষ আদালতে পেশ করা হয় শাহজাহানকে। আপাতত ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ইডি হেফাজতে থাকবেন তিনি। সূত্রের খবর, ভারত-বাংলাদেশের সঙ্গে চিংড়ি ব্যবসায় যুক্ত একটি নামী সংস্থার সঙ্গে ধৃতের যোগ মিলেছে। অভিযোগ, ওই সংস্থার কর্ণধারকে চিংড়ি ব্যবসায় টাকা লেনদেনের ভুয়ো বিল তৈরি করতে বলেছিলেন শাহাজাহান।
ওই ব্যবসায়ীকে বলা হয়েছিল, নগদ টাকা তাঁর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই টাকার কমিশনও পাবেন তিনি। বিনিময়ে বাকি টাকা ওই ভুয়ো বিলের মাধ্যমে চলে আসবে শাহজাহানের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেখ সাবিনা ফিসারিজ-এর অ্যাকাউন্টে। ইডি জানতে পেরেছে, সন্দেশখালিতে ভেড়ি এবং জমি দখলের টাকা এ ভাবেই মাছ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কালো থেকে সাদা করা হতো।
আরও জানা গিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ওই সংস্থার মাধ্যমে ১০৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এক ব্যবসায়ীর বয়ানে ইডি জানতে পেরেছে, ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ৩১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এই দু’জনের বয়ান মামলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
এদিকে, মঙ্গলবার বসিরহাট উপ-সংশোধানাগারে ঠাঁই হওয়া মেহেবুর মোল্লা এবং সুকমল সর্দারকে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানানো হয় সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে। সেই আবেদন মঞ্জুরও হয় এদিন। পাশাপাশি ইডি-র উপরে হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার অভিযুক্ত ৯ জনকে আদালতে পেশ করা হলে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এদিন বসিরহাট মহকুমা আদালতের আইনজীবী কালিচরণ মণ্ডল বলেন, ‘অভিযুক্তদের আইনজীবীরা আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। সিবিআই তার বিরোধীতা করে।’