মণিপুরে দু’শো চার্চ জ্বালানোয় তিনি ‘ব্যথিত’, জানালেন মমতা
এই সময় | ০৩ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: অশান্ত মণিপুর নিয়ে ফের সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে বাংলায় ক্ষমতায় এসে জঙ্গলমহল ও পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে তৃণমূল সরকার, অথচ মণিপুরকে শান্ত করতে পারছে না মোদী-গভর্নমেন্ট — পরোক্ষে এ বার্তাই দিতে চেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।আপাতত ঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়িতে আছেন তিনি। কাল, বৃহস্পতিবার কোচবিহারে তাঁর নির্বাচনী জনসভা। উত্তরবঙ্গে পরপর নির্বাচনী সভা করে আগামী ৭ তারিখ জঙ্গলমহলে যাওয়ার কথা তৃণমূলনেত্রীর। জলপাইগুড়ির চালসায় মঙ্গলবার একটি চার্চে যান মমতা। সেখানেই মণিপুরে লাগাতার অশান্তিতে পরোক্ষে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
মণিপুরে জাতিদাঙ্গা নিয়ে আগেও সরব হয়েছেন মমতা। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমি ব্যথিত যে মণিপুরে দু’শো চার্চ জ্বালিয়ে দিয়েছে। মসজিদেও বোমা মেরেছে। সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে যে শান্তির থেকে বড় কিছু নেই। ভোটের জন্য কোনও রাজনৈতিক দল যদি দাঙ্গা-হাঙ্গামা করতে চায়, ক্ষমা করবেন না। যার যেমন ইচ্ছে সেই পোশাক পরো, খাবার খাও, উৎসব করো — এটাই সাংবিধানিক অধিকার।’
প্রতি বছর বড়দিনের আগে, ২৪ ডিসেম্বর রাতে চার্চে প্রার্থনা করতে যান মমতা। রেড রোডে ঈদের নমাজেও যান। কলকাতা ও আশপাশের বহু দুর্গাপুজোর উদ্বোধনও করেন। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সুসম্পর্কের কথাও এ দিন চার্চে উপস্থিত বিশিষ্টজনদের জানান মমতা।
বলেন, ‘কখনও আমি সেন্ট পল্স চার্চে যাই। আমার দলের নেতারা, সাংসদ-বিধায়করা সব চার্চে যান। আমি সব অনুষ্ঠানে যাই। মাদার টেরেসার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক ছিল। আমি ভ্যাটিকানে গিয়েছি। মণিপুরে যখন দু’শোর উপর চার্চ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, তখন আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। যদিও এখানে রাজনীতির কথা বলতে চাই না।’
চার্চের এই অনুষ্ঠান থেকে শান্তি বজায় রাখার বার্তাও দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের উদ্যোগে পাহাড় যে শান্ত হয়েছে, তরাই-ডুয়ার্সের জনতাকে সে বার্তাও দিতে চেয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘দার্জিলিঙে দশ বছর অন্তর গন্ডগোল হয়। গন্ডগোল হলে সব শিল্প চলে যায়, হোটেল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে তরাই-ডুয়ার্সের মানুষও সমস্যায় পড়তেন। আমি চাই না, পাহাড়ের সঙ্গে তরাই-ডুয়ার্সের কোনও পার্থক্য তৈরি হোক।’
জঙ্গলমহলেও একই ভাবে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে এ দিন মন্তব্য মমতান। তাঁর কথায়, ‘ জঙ্গলমহলে আগে তিন-চারশো খুন হতো। কেউ বাড়ি থেকে বেরোতে পারত না। আমাদের সরকার আসার পর এখন পুরো শান্তি রয়েছে।’