• 'ফিরিয়ে দাও খেলার মাঠ', জবরদখলের অভিযোগে আন্দোলন গ্রামবাসীদের
    এই সময় | ০৩ এপ্রিল ২০২৪
  • একদিন-দু'দিন নয়, দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে সবুজ বনানী ঘেরা মাঠে শরীর চর্চা চলে আসছে দশটি গ্রামের বাসিন্দাদের। হঠাৎ করে এক লহমায় কেউ বা কারা মাঠ জবরদখল করে নির্মাণ কার্যের চেষ্টা চালাচ্ছে, অভিযোগ এমনটাই। আর তার জেরেই প্ল্যাকার্ড হাতে মাঠ বাঁচানোর তাগিদে আন্দোলনে নেমে পড়লেন এলাকার নবীন থেকে প্রবীণ, সমস্ত বয়সের মানুষ। ঘটনাটি বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের ঘোষের গ্রাম পঞ্চায়েতের দলপুর এলাকার।দীর্ঘ কয়েক প্রজন্ম ধরেই ওই মাঠ এলাকার বাসিন্দাদের শুদ্ধ বায়ুর যোগান দিয়ে আসছে। নিয়মিত ওই মাঠেই চলে প্রায় ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের খেলাধুলো সহ বিভিন্ন শরীরচর্চা ও অনুশীলন। এমনকী ওই মাঠে শরীর চর্চা করেই আশেপাশের বেশ কয়েকজন যুবক দেশের নিরাপত্তা বাহিনীতে চাকরিও পেয়েছেন। এমনকী ওই মাঠে সরকারি উদ্যোগে বেশকিছু খেলাধূলাও হয়েছে বলে জানান গ্রামবাসীরা। আর সেই মাঠেই এবার জবর জখলের অভিযোগ।

    গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, বাপ ঠাকুরদার আমল থেকে এাকার ছেলে মেয়েরা ওই মাঠে খেলাধূলা করে আসছেন। এক কথায় বলতে গেলে পার্শ্ববর্তী ১০ থেকে ১৫টা গ্রামের মানুষের নিত্য জীবনযাত্রার সঙ্গে যুক্ত এই মাঠ। কিন্তু কোনও কিছু না জানিয়েই বর্তমানে মাঠে খনন কার্য শুরু করেছে এক শ্রেনীর মানুষ। এমনকী বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু কর জেলাশাসকের দফতরে জানান হলেও, এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা মেলেনি বলেই অভিযোগ গ্রামবাসীদের।

    মাঠ দখলের অভিযোগ সামনে আসতেই ময়দানে নেমে পড়েছে শাসক বিরোধী দুই শিবিরই। তৃণমূল এবং বিজেপি, দু'পক্ষই এই মাঠ দখলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তৃণমূলের তরফ থেকে ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বঙ্কিম মিশ্র বলেন, 'বাচ্চাদের এই মাঠ দখলকে কোনভাবেই আমরা সমর্থন করি না, নির্বাচনী বিধি লাগু হয়ে যাওয়ার কারণে সরকারি কোনো কাজ করা যায় না। অভিযোগের ভিত্তিতে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' অন্যদিকে বিজেপির তরফ থেকে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, 'এই মাঠ দখল তৃণমূলের নেতাদের মদতেই চলছে, যাকে এক কথায় বলতে গেলে প্রোমোটাররাজ, আমরা এই ঘটনায় ধিক্কার জানাই। বাচ্চাদের মাঠ বাচ্চাদেরই ফিরিয়ে দেওয়া হোক।'

    তবে বিষয় যাই হোক না কেন বাপ ঠাকুর দাদার আমল থেকে দেখে আসা খেলার মাঠ কি আগের চেহারায় ফিরে পাবেন গ্রামবাসীরা, না কি অসাধু ব্যবসায়ীদের কোপে তা হারাতে হবে? যদিও গ্রামবাসীরা অবশ্য নাছোড়বান্দা যে কোনও পরিস্থিতিতে মাঠ তাঁদের ফিরিয়ে দিতেই হবে। নয়তো বড়সড় আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
  • Link to this news (এই সময়)