গোবিন্দ রায়: দাড়িভিট কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও বহাল এনআইএ তদন্তের নির্দেশ। ক্ষতিপূরণের নির্দেশও বহাল রাখল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এনআইয়ের হাতে সমস্ত নথি তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এনআইএ তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেন।
ঘটনা বছর ছয় আগের। ২০১৮ সালের উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট (Darivit) বিদ্যালয়ে বাংলা শিক্ষক নিয়োগের জটিলতা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। অভিযোগ, অশান্তি থামাতে গুলি চালায় পুলিশ। জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধের মাঝে পড়ে প্রাণ হারায় দুই ছাত্র – রাজেশ সরকার, তাপস বর্মন। তা নিয়ে সেসময় রাজ্য রাজনীতির জল গড়িয়েছিল বহুদূর। বাংলার বদলে ওই স্কুলে উর্দু শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মমতা সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছিল বিজেপি। বলা হচ্ছিল, বাংলা ভাষার অমর্যাদা করা হচ্ছে। রাজেশ সরকার, তাপস বর্মনকে ভাষার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে, এই উপমাও দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় তদন্ত চলছে এখনও।
তবে সিআইডি তদন্ত সঠিক পথে এগোয়নি বলে আগেই পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল হাই কোর্ট। ঘটনার ৫ দিনের মাথায় তদন্তভার হাতে নেয় সিাইডি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছিল, কোনও শক্তিশালী অস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হয়। তাতেই প্রাণ গিয়েছিল দুই ছাত্রর। অথচ কোন আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল তা শনাক্ত করতে পারেনি সিআইডি। এদিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ এনেছিল স্থানীয় বাসিন্দার। সেই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।
দাড়িভিট কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে গত মাসে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও দাড়িভিট কাণ্ডে গত ১০ মাসেও NIA তদন্ত শুরু না হওয়ায় রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিআইজি-সিআইডির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলা দায়েরের অনুমতি চায় রাজ্য সরকার। তার পরই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয় রাজ্যের তরফে। ডিভিশন বেঞ্চেও বহাল এনআইএ তদন্তের নির্দেশ।