দাড়িভিটকাণ্ডে NIA তদন্তের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চেও মুখ পুড়ল মমতা সরকারের
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৩ এপ্রিল ২০২৪
দাড়িভিটে পুলিশের গুলিতে ২ যুবকের মৃত্যুর ঘটনার NIA তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দিল, সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মানতে হবে রাজ্য সরকারকে। কেন নির্দেশ মানা হয়নি তা জানতে চেয়ে আগামী ১৫ মার্চ রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ADG সিআইডিকে আদালতে হাজিরা দিতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
গত বছর ১০ মে দাড়িভিটকাণ্ডের তদন্তভার CIDর থেকে নিয়ে NIAকে দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। একই সঙ্গে তদন্ত সংক্রান্ত যাবতীয় নথি NIAকে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন তিনি। তার পর বছর ঘুরতে চললেও NIAকে কোনও নথি হস্তান্তর করেনি রাজ্য পুলিশ। এই অভিযোগে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় NIA. সেই মামলার শুনানিতে গত ১৫ মার্চ রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চট্টোপাধ্যায় ও ADG CID রাজাশেখরণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন বিচারপতি মান্থা। বিচারপতি মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।
সেই মামলার শুনানিতে বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘এই ঘটনায় NIA তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ অযৌক্তিক মনে হচ্ছে না। আদালতের নির্দেশের এতদিন পরও কেন ওই ঘটনার তদন্তের নথি NIAকে হস্তান্তর করা হয়নি তা এজলাসে এসে জানাতে হবে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ADG CIDকে।’ আগামী ১৫ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন হাজিরা দিতে হবে ৩ জনকে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিটে বাংলা মাধ্যম স্কুলে উর্দু ভাষার শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে সরব হয় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা। স্কুল ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। অভিযোগ বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের গাড়ি থেকে গুলি চালানো হয়। গুলিতে মৃত্যু হয় রাজেশ ও তাপস নামে ওই স্কুলেরই প্রাক্তন ২ ছাত্রের। সেই ঘটনার NIA তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় নিহতদের পরিবার। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থলে গুলি চললেও তা পুলিশ চালায়নি।
বিজেপির দাবি, তোষণের রাজনীতি করতেই দাড়িভিটে স্কুলে উর্দু শিক্ষক নিয়োগ করতে চাইছিল রাজ্য সরকার। এমনকী নিহতদের সুবিচারের পথে সরকারের বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণ তোষণের রাজনীতিই। এদিন NIA তদন্তের নির্দেশ দেওয়া ছাড়াও ওই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশও বহাল রেখেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। সাত দিনের মধ্যে পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।