ক্ষুদ্র চা চাষীদের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী
আজকাল | ০৪ এপ্রিল ২০২৪
অতীশ সেন, ডুয়ার্স : ক্ষুদ্র চা চাষীদের সমস্যার বিষয়ে চিন্তা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পাশাপাশি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতির আবেদনও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১ এপ্রিল থেকে উত্তরবঙ্গের বটলিফ ফ্যাক্টারিগুলি ক্ষুদ্র চা চাষীদের থেকে চা পাতা কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। ক্ষুদ্র চা চাষীদের উৎপাদিত কাঁচা পাতায় বিপজ্জনক কীটনাশক নেই এই মর্মে ল্যাবরেটরির শংসাপত্র না থাকলে তাঁরা কাঁচা চা পাতা কিনবেন না বলে জানিয়েছিলেন। কাঁচা পাতায় নিষিদ্ধ কীটনাশক থাকলে উৎপাদিত চায়েও তা থেকে যাবে, ফলে কাঁচা পাতা উৎপাদনে তাঁদের ভূমিকা না থাকলেও বটলিফ ফ্যাক্টারিগুলি এর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই আশঙ্কাতেই তাঁরা কাঁচা পাতা কেনা বন্ধ করে দিয়েছে, এরফলে ক্ষুদ্র চা চাষীরা সমস্যায় পড়েছেন। এই বিষয়েই চিন্তা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার জনসংযোগ সেরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, প্রকাশ চিকবড়াইক ও নির্মল চন্দ্র রায় তাঁকে জানান উত্তরবঙ্গের প্রায় দশ লক্ষ ক্ষুদ্র চা চাষী রয়েছে, এদের চা বাগানের জমির পরিমান ৫ বিঘা পর্যন্ত। এই সমস্ত ক্ষুদ্র চা চাষীদের চা শ্রমিকও বলা যায়, এরা নিজেরা কাঁচা চা পাতা উৎপাদন করে তা বটলিফ ফ্যাক্টারিতে বিক্রি করে। এই চা বাগানগুলিতে পোকামাকড়ের উপদ্রব আটকাতে ২০১৫ সালে টি বোর্ড একটি নির্দেশ দিয়েছিল যা বাস্তবায়নের কোনও সময়সীমা দেওয়া ছিল না। এখন এদের উৎপাদিত কাঁচা পাতা কেনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ক্ষুদ্র চা চাষীদের নিজেদের সংশোধন করার একটা সুযোগ দেওয়া হোক বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এখন যাতে ক্ষুদ্র চা চাষীরা কর্মহীন না হয়ে পড়ে, সেটি দেখার জন্য জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা বটলিফ ফ্যাক্টারি গুলোকে অনুরোধ করবেন যাতে তাঁরা চা পাতা কেনা বন্ধ না করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভোটের পর কৃষি দপ্তর, পরিবেশ দপ্তর, স্বাস্থ্য দপ্তর ও সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান খোঁজা। আগে সুন্দরবন এলাকায় নোনা জলে ধান চাষ করতে সমস্যা হত, বৈজ্ঞানিকেরা স্বর্ণ ধান বানিয়েছেন, যা নোনা জলেও ভালো হয়, ফলে এখন ভাল ধান উৎপাদন হচ্ছে। তেমনই চা গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে বিজ্ঞানীরা কাজ করবেন। তবে সেই সময়টুকু দরকার। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগে টি বোর্ডে রাজ্যের প্রতিনিধি থাকত, পাশাপাশি পোর্ট ও হলদিয়া বন্দর, ডি.ভি.সি"তে বাংলার প্রতিনিধি থাকত। এখন এই সমস্ত দপ্তরে রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি রাখা হয় না। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে তিনি বলেন, দূর্গতদের পাশে দাঁড়ানো দরকার, মানুষের সমস্যা নিয়ে রাজনীতি করা উচিৎ নয়। তিনি বলেন, সকলের কাছে ত্রাণ ও সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁরা কেউ বঞ্চিত হবে না। ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুমতির প্রয়োজন, সেই অনুমতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে তিনি অনুরোধ করেছেন, বিষয়টিকে মানবিকভাবে সকলকে দেখতে তিনি অনুরোধ করেন।