• ড্রেস খুলতে হবে, বিচারক নির্দেশ দিলেন গণধর্ষিতাকে
    এই সময় | ০৪ এপ্রিল ২০২৪
  • জয়পুর: গণধর্ষিতা দলিত গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্য তাঁকে বিচারকের ঘরে নিয়ে এসেছিল পুলিশ। ১৮ বছরের ওই তরুণীর মা ও ভাই এবং সঙ্গে আসা পুলিশকর্মীদের ঘরের বাইরে যেতে নির্দেশ দেন বিচারক। বন্ধ ঘরে শুরু হয় নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া। কিছুক্ষণ পর সেই ঘর থেকেই কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসেন ওই তরুণী।মাকে নিয়ে তিনি সোজা হাজির হন পুলিশ সুপারের অফিসে। তরুণীর অভিযোগ, বন্ধ ঘরে পোশাক খুলে তাঁর শরীরের ক্ষতচিহ্ন দেখতে চেয়েছিলেন ওই বিচারক। ভয়ানক ঘটনাটি রাজস্থানের হিন্দন শহরের। ওই বিচারকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তফসিলি জাতি ও উপজাতি আইনেও মামলা শুরু হয়েছে ওই বিচারকের বিরুদ্ধে।

    গত ১৯ মার্চ স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ করে ওই তরুণীর পরিবার। কিন্তু গোড়ায় পুলিশ সেই অভিযোগ নেয়নি। আদালতের নির্দেশে ২৭ মার্চ রাজস্থানের কারাওলি জেলার হিন্দন সদর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। গত ৩০ মার্চ নিগৃহীতা তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষার পর গোপন জবানবন্দি নিতে তাঁকে ওই বিচারকের দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। পরিবারের সদস্য ও পুলিশকে বাইরে রেখে নিজের চেম্বারে তরুণীর বয়ান নেন বিচারক। নিগৃহীতার অভিযোগ, বয়ান লেখা শেষ হতেই ওই বিচারক তাঁকে পোশাক খুলে দাঁড়াতে বলেন তাঁর শরীরের ক্ষতচিহ্ন দেখার জন্য।

    থতমত খেয়ে ওই তরুণী বলেন, অপরিচিত পুরুষের সামনে তিনি পোশাক খুলতে পারবেন না। অভিযোগ, এর পরেই তাঁকে ঘর থেকে বের করে দেন ওই বিচারক।

    বিচারকের চেম্বার থেকে বেরিয়ে মা ও ভাইকে নিয়ে হিন্দন সিটি পুলিশ সুপারের অফিসে যান ওই তরুণী। সেখানে তাঁর অভিযোগ পেয়ে অবশ্য দ্রুত ওই বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। ঘটনাটির গুরুত্ব বুঝে কড়া অবস্থান নিয়েছে রাজস্থান হাইকোর্টও।

    গোটা ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছে রাজ্যের নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলিও। মঙ্গলবার হাইকোর্টের ভিজিল্যান্স রেজিস্ট্রার অজয় চৌধুরী তিন ঘণ্টা ধরে ওই বিচারককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁর অতীত আচরণ সম্পর্কে জানতে সহকর্মীদের সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলা হচ্ছে। কারাওলির এসসি-এসটি সেলের ডেপুটি সুপার মিনা মীনা বলেন, ‘মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় ওই বিচারকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। তদন্ত চলছে’

    গত ফেব্রুয়ারি মাসেই ত্রিপুরার ধলাই জেলায় প্রায় একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। এক ধর্ষিতা তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার সময় তাঁর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে সংশ্লিষ্ট বিচারকের বিরুদ্ধে। সই ঘটনাতেও পুলিশে অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন ওই নিগৃহীতা। যদিও তদন্ত শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ওই বিচারকের বিরুদ্ধে।
  • Link to this news (এই সময়)