BJP নেতার ছেলের 'শিল্প'! বুথ সভাপতি সহ ১২ পুরুষের অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা
এই সময় | ০৪ এপ্রিল ২০২৪
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তা এবার ১২ জন পুরুষ! অবাক করার মতো হলেও এমনটাই ঘটেছে। আর এই 'অসাধ্য সাধন' করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নেওয়া ১২ জন পুরুষের মধ্যে রয়েছেন ময়নার এক BJP নেতা। 'বর্তমান'-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা। প্রশাসন জানাচ্ছে, এই গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে এক BJP নেতার ছেলের 'শিল্প'।প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়না ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা শ্রীকান্ত দাস। তিনি একটি সংস্থার হয়ে আধার কার্ড-ভোটার কার্ড সংক্রান্ত কাজ করত। আর কাজের জন্য তাকে অন্যান্য জেলায় পাঠানো হত। অভিযোগ, শ্রীকান্ত লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে পুরুষদের নাম তুলতে হুগলি জেলার খানাকুল ২-এর লগ ইন আই ডি-র আশ্রয় নেয়। জানা গিয়েছে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা এই যাবতীয় অভিযোগ মুচলেকার মাধ্যমে স্বীকারও করেছে সে।
কী ভাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে পুরুষের নাম? জানুন প্রতারণার সেই 'মাস্টারপ্ল্যান'
খানাকুল ২-এ দুয়ারে সরকার-এর শিবিরে কয়েকজন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছিলেন। আর সেই আবেদনকারীদের নাম এবং অন্যান্য নথি নিলেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দেয়নি সে। বদলে ময়নার কয়েকজন পুরুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে দিব্যি খানাকুলের কিছু মহিলার নাম-ঠিকানা এবং অন্যান্য নথিকে সামনে রেখে তাঁদের ভাগের প্রাপ্য পেতে শুরু করে এই ১২ জন পুরুষ।
উল্লেখ্য, শ্রীকান্ত দাসের বাবা অশোক দাস দক্ষিণ হরকুলি বুথের BJP সভাপতি। এদিকে যাঁদের নাম-ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছিল তাঁরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা না পেয়ে অভিযোগ জানান। এরপরেই তদন্তে গোটা বিষয়টি সামনে আসে। অশোকের নামও ছিল ওই ১২ জনের মধ্যে।
বুধবার শ্রীকান্ত দাসকে ডেকে পাঠান ময়নার বিডিও। তিনি জানান, এই কারচুপির জন্য খানাকুলের বিডিওর লগ ইন আই ডি ব্যবহার করা হয়েছিল। এদিকে অভিযুক্ত এখনও 'ভুল বশত করেছি' বলে দায় এড়াচ্ছে। পাশাপাশি এই ধরনের 'ভুল' আর ভবিষ্যতে সে করবে না, এই 'প্রতিশ্রুতি'-র ফুলঝুরিও শোনা গেল তার মুখে।
এদিকে গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। ভোটমুখী বঙ্গে BJP নেতার ছেলের এই 'গুণ' সামনে আসাতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির BJP-র সদস্য বাদল আদক 'বর্তমান'-কে বলেন, 'অশোকবাবু দলের বুথ সভাপতি। তাঁর ছেলে এই ধরনের কাজ করবে তা ভাবতে পারছি না।'
অন্যদিকে, তৃণমূল শিবিরের মন্তব্য, দিদি মহিলাদের ভালোর জন্য এই প্রকল্প চালু করেছিলেন। টাকাও বাড়ানো হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে। এই ধরনের ঘটনা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না।