জমিদার বাড়ির উঠোনে পুকুর খুঁড়তে গিয়ে মিলল শতাব্দী প্রাচীন 'মোহর'। আর সেই মোহর উদ্ধারকে ঘিরেই এখন শোরগোল। এমনকী অনেকে মোহর নিয়ে গিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। ঘটনার জেরে রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রে বীরভূমের কীর্ণাহারের এর ধ্রুববাটি গ্রাম।শতাব্দী প্রাচীন বাড়ির উঠোন খুঁড়তেই বেরিয়ে পড়ল 'মোহর', আর তাই নিয়েই ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হল এলাকায়। ঘটনা বীরভূমের কীর্ণাহারের ধ্রুববাটি গ্রামের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কীর্ণাহারের ধ্রুববাটি গ্রামের জমিদার বংশের সন্তান ছিলেন মুরারীমোহন দত্ত , অনাদিমোহন দত্ত, মদনমোহন দত্ত ও কিশোরীমোহন দত্তরা । তাঁদের বর্তমান বংশধররা এখন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। বর্তমানে পুরনো এই জমিদার বাড়িতে থাকেন বিশ্বজিৎ দত্ত।
পুকুর খননের সময় তোলা মাটি থেকে উদ্ধারআর এই পুরনো বাড়ির উঠোনেই জেসিবি দিয়ে খনন করে তৈরি করা হচ্ছিল পুকুর। সেখান থেকে ওঠা মাটি ফেলা হচ্ছিল চতুর্ভুজপুর ও জামনা যাওয়ার রাস্তার ধারে। মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে চলে যায় পুরনো কয়েনগুলিও। তার বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর গত শনিবার অর্থাৎ, ৩০ মার্চ লাভপুরের নাঙলহাটা গ্রামে চলছিল শিব পুজো। ভক্তরা সেখানে যাওয়ার পথে কয়েকজনের নজরে পড়ে কয়েনগুলি। তারপর, তাঁরা সেই মাটি থেকে কেউ ১০টা, কেউ ২০টা, কেউ আবার ১টা করে পুরনো যুগের রুপোর কয়েন পান। তাঁদের দাবি, মাটির কলসির ভিতরে ভরা ছিল কয়েনগুলি। জেসিবি দিয়ে মাটি তোলার সময় হয়তো সেটি ভেঙে গিয়েছে। তার জেরেই ছড়িয়ে পড়েছে কয়েনগুলি।
এই প্রসঙ্গে জোৎস্না মণ্ডল নামে এক স্থানীয় মহিলা বলেন, 'তিন - চার দিন আগে বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরার পথে আমার মেয়ে বলে, সবাই মাটি খুঁড়ছে তুমিও দেখ। কয়েকটা মাটির ঢেলা ভেঙ্গে একটি কয়েন পেয়েছি। পুরনো কয়েন পেয়ে খুব ভালো লাগছে।'
কয়েনে আরবী হরফে লেখাএদিকে বাড়ির মালিক বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, 'আমি ছোট্ট করে পুকুর কাটিয়েছিলাম। বাড়ির পাশে নতুন রাস্তা হচ্ছে বলে একজন সেই মাটি নিয়েছে। খাল করার পর কিছু কয়েন কয়েকজন খুঁজে পেয়েছে। এই বাড়ি অনেকদিন আগেকার। কোথায় কী ছিল আমরা নিজেরাই জানি না, এখন শুনছি পেয়েছে। কয়েনগুলো হাতে নিয়ে দেখলাম। আরবী ভাষায় লেখা আছে।' তবে প্রাচীন কয়েন যে ভাবে গ্রামবাসীরা নিয়ে চলে যাচ্ছেন, তা কি আদতেও করা যায়? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এদিকে এই বিষয়ে লাভপুরের বিডিও শিশুতোষ প্রামানিক বলেন, 'পুকুর খুঁড়তে গিয়ে কয়েন উদ্ধারের বিষয়টা আমরা শুনেছি। তবে যে'কটা কয়েন বেরিয়েছিল তা তো স্থানীয় মানুষরাই নিয়ে চলে গিয়েছেন। সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তারপরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'