এই সময়: রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (বালু) চিকিৎসার ক্ষেত্রে এসএসকেএম হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে বুধবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারক। বালুর কিডনির একটি পরীক্ষার ব্যাপারে অনুমতি সংক্রান্ত একটি মামলার এদিন শুনানি ছিল ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ইডির বিশেষ আদালতে।সূত্রের দাবি, বালুর যাবতীয় টেস্টের রিপোর্ট দেখে বিচারক এদিন বলেন, ২৭ জানুয়ারি যা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তার থেকে আপনারা একটু বেশিই করছেন। অর্ডারে কী কী টেস্ট করাতে হবে, তাও বলা ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বেশিই টেস্ট করা হয়েছে।
এখানেই থেমে না থেকে বিচারক আরও বলেন, ‘উনি একজন প্রভাবশালী। দীর্ঘদিন রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। সুতরাং, ওঁকে সরকারি অফিসাররা অনেকেই চেনেন।’ বালুর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় পাল্টা জানান, ওঁর ওজন ক্রমশ কমে যাচ্ছে। হাই সুগার। আপনি বলছেন, কিছু না!’ বিচারকের জবাব, ‘তিন মাস আগেও ওঁর অবস্থা যেমন ছিল, এখনও তেমনই আছেন।’
এরপরেই বালুর আইনজীবী বিচারকের কাছে জানতে চান, ‘প্রভাব খাটানো হচ্ছে বলে কি আপনি মনে করেন?’ বিচারক জানান, ‘হ্যাঁ।’ ইডির তরফেও এদিন আদালতকে জানানো হয়, জ্যোতিপ্রিয়র যা শারীরিক অবস্থা, তাতে বাইরের কোনও সেন্টার থেকে টেস্টের প্রয়োজন নেই।
গত ৬ মার্চও বালুর জামিনের আবেদন জামিনের আবেদন করেছিলেন তাঁর আইনজীবী। বিশেষ সিবিআই আদালতে বালুর আইনজীবী জানান, ওঁর যে চিকিৎসা প্রয়োজন, তা জেলে সম্ভব নয়। যদিও তাঁর বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, বিভিন্ন হাসপাতালের রিপোর্ট বলছে ওঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
স্থিতিশীল না হলে তাঁকে হাসপাতাল ছেড়েই বা দেবে কেন? বালুর আইনজীবী জানান, এসএসকেএম ছাড়া অন্য যে কোনও হাসপাতালের চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখুন ওঁকে। বালুর আগে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়ার আবেদনের ক্ষেত্রেও এসএসকেএমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত।
এদিন বালুর স্বাস্থ্য নিয়ে আদালতের মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সব দুষ্কৃতীর আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে উডবার্ন ওয়ার্ড। দীর্ঘদিন ধরেই ওদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।’ যদিও আদালতের বক্তব্য প্রসঙ্গে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ এদিন কোনও মন্তব্য করেননি। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ৯ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করেছেন বিচারক।
অন্যদিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধৃত স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে এবার হেফাজতে নিল ইডি। সোমবার প্রেসিডেন্সি জেলে শান্তিপ্রসাদকে জেরা করতে গিয়েছিলেন ইডির অফিসাররা। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। সোমবার পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতে রাখার রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।