লোকসভা নির্বাচন নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। জোরকদমে চলছে প্রচার। শাসক হোক বা বিরোধী, একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে শানাতে শুরু করেছে আক্রমণ। এক্ষেত্রে বিরোধীরা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বিরুদ্ধে যে সমস্ত রাজনৈতিক হাতিয়ার নিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছে, তার মধ্যে অন্যতম সন্দেশখালি। বিজেপি, কংগ্রেস, বাম বা আইএসএফ, সমস্ত বিরোধী দলই সন্দেশখালি ইস্যু নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছে তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে। এমনকী রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদেরও একাংশ মনে করছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণের ক্ষেত্রে বিরোধীদের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে এই ইস্যু। আর এবার এই সন্দেশখালি নিয়ে মুখ খুললেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর।একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'সন্দেশখালি ইস্যু নিয়ে হোক বা সেটি ছাড়া, বিজেপি বাংলায় উত্থান করেছে। ' এমনকী ২০১৯ সালে বিজেপি যে পরিমাণ আসন পেয়েছিল, এবার আসনের সংখ্যা তার চেয়ে নীচে যাবে, এমনটও তিনি মনে করেন না বলেও জানিয়ে দেন পিকে।
কী বললেন প্রশান্ত কিশোর?প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'বাংলার মাটিতে আমি এখন নেই, তবে যখনই সন্দেশখালির মতো বিষয় আসে, তখন ক্ষমতাসীন যে দল থাকে, তাদের লোকসান হবেই হবে। সন্দেশখালি নিয়ে হোক বা সন্দেশখালি ছাড়া, বিজেপির বাংলায় উত্থান হয়েছে। দিল্লিতে বসে অনেকেই ভাবেন যে বাংলায় বিজেপি শেষ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু বিজেপি আজও সেখানে খুবই শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। সেই দিক থেকে বিজেপি ২০১৯-এ যা পেয়েছিল তার থেকে নীচে যাবে, এমনটা আমি মনে করি না। আমার মনে হয় লোকসভায় বাংলায় বিজেপি অনেকটাই ভালো নম্বর পেতে পারে।'
Sandeshkhali News: আতঙ্কের স্মৃতি কি এখন অতীত? কেমন আছে সন্দেশখালি?
একই মতামত বাম-বিজেপিরসন্দেশখালি ইস্যু ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে, এমনটা মনে করছেন এরাজ্যের বিরোধী নেতারাও। এক্ষেত্রে বসিরহাট সাংগঠিন জেলার বিজেপি সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, 'এটা তো স্বাভাবিক বিষয়, প্রভাব তো পড়বেই। সর্বত্র একই পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আছে। জনগণ যে ভাবে সমর্থন করছে, আমরা পুরো আশাবাদী।' একইরকম কথা শোনা গেল সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দারের মুখেও। তিনিও মনে করেন সন্দেশখালির প্রভাব ভোটে গোটা বাংলার উপরেই পড়বে। নিরাপদ সর্দার আরও মনে করে, সন্দেশখালির ঘটনার প্রভাব গোটা রাজ্যে দেশের বিভিন্ন কোণায় কোণায় পড়বে।
মানতে নারাজ তৃণমূলযদিও পিকের দাবি মানতে নারাজ বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'আমি ওসব বিশ্বাস করি না। আমি যেদিন সন্দেশখালিতে গিয়েছি, সেদিন মানুষের উল্লাস, জয়জয়কার অবস্থা। ৪ তারিখ দেখা যাবে।' সেক্ষেত্রে সত্যিই সন্দেশখালির ঘটনার কোনও প্রভাব রাজ্যের ফলাফলে পড়ে কি না, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৪ জুলাই পর্যন্ত।