• নদীর পেটে তলিয়ে যাওয়ার আতঙ্কে বলাগড়, 'দিদি একা কত লড়বে'! মত রচনার...
    ২৪ ঘন্টা | ০৫ এপ্রিল ২০২৪
  • বিধান সরকার: বৃহস্পতিবার হুগলির চাঁদরা কলোনী এলাকায় নদী পার ভাঙনে গ্রামের রাস্তা তলিয়ে যায়। কয়েকদিন আগে গুপ্তিপাড়ার ১ পঞ্চায়েতের নদীর পার ভেঙে জলে তলিয়ে যায়।এলাকার বাসিন্দারা মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল।গঙ্গা ভাঙ্গনে তলিয়ে গেছে চাষের জমি ঘরবাড়ি। বলাগড়ের ভাঙ্গন সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেই সমস্যা কবে মিটবে আদৌ মিটবে কিনা জানা নেই বলাগড়বাসীর।তবে নির্বাচন এলেই বলাগড় নদী ভাঙন প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। সামনেই লোকসভা নির্বাচন।এবারও প্রাসঙ্গিক ভাঙন।ভোট এলেই দেখা মেলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের, মেলে প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু আদতে কোনো সমস্যার সমাধান হয় না বাসিন্দাদের । গুপ্তিপাড়া এক পঞ্চায়েতের ফেরিঘাট সংলগ্ন গঙ্গা পাড়ে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেইমতো ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে রাজ্য সরকার গঙ্গা ভাঙন রোধে কাজ করছে। বোল্ডার ফেলে, বালির বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা হয়। স্থানীয়দের দাবি, যেভাবে গঙ্গা ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে একদিন পুরো এলাকাটাই গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যাবে। রাজ্য বা কেন্দ্র সরকার সম্পূর্ণভাবে উদাসীন। বড় প্রকল্প না হলে গঙ্গা ভাঙ্গন রোধ করা যাবে না। 

    স্থানীয় বাসিন্দা টিংকু বৈদ্য জানান, বর্ষা এলেই শুরু হয় গঙ্গার ভাঙ্গন। প্রায় বিঘার পর বিঘা জমি গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যায়। একসময় যে জায়গায় চাষ হতো, এখন সেই জমি গঙ্গা-বক্ষে তলিয়ে গিয়েছে। গুপ্তিপাড়া, চরকৃষ্ণবাটি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এই গঙ্গা ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বাম আমল থেকেই মেলে প্রতিশ্রুতি, বর্তমান সরকারের আমলেও মিলেছে সেই প্রতিশ্রুতি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।বিদায়ী বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেও কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। ফেরিঘাট পার হয়ে যাতায়াত করতেও সমস্যা হয় আমাদের। আবার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে ভোট। তাই যেই জিতুক তাদের কাছে দাবি থাকবে গঙ্গা ভাঙ্গন রোধ করার।গুপ্তিপাড়া ১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই গঙ্গার ভাঙ্গন চলছে। তারমধ্যে ফেরি ঘাটের ডানদিকে প্রায় দেড়শো মিটার ও বাঁদিকে প্রায় ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়। তবে যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে রোধ করা সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে ভাঙ্গন রোধে কাজ করা প্রয়োজন। হুগলি লোকসভায় যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের কাছে করজোরে আবেদন বলাগরবাসীর পাশে দাঁড়ান।তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বলাগড়ের ভাঙ্গন একটা বড় ইস্যু। তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে যদি না থাকে দিদি একা কত লড়াই করবে। পশ্চিমবঙ্গ কে উন্নত মানের করার জন্য দিদি লড়াই করেই চলেছে। যদিও দিদি টাকা দিয়েছে তার কাজ চলছে। তারপরেও টাকার দরকার। এলাকার পাঁচ বছরের সাংসদ তাকে দেখা যেত না, এখন তাকে দেখা যাচ্ছে। আমি সাংসদ হলে পার্লামেন্টে গঙ্গা ভাঙ্গন রোধে প্রথম আওয়াজ তুলবো।বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, উনি কিছু জানেন না। যা শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাই বলছে। গঙ্গা ভাঙন রোধে প্রচুর টাকা কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারকে দিয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা রাজ্য সরকার খরচ করেনি। কেন খরচা করে নি? কত টাকা এসেছিল সেটা তৃণমূল প্রার্থীকে জিজ্ঞেস করুন ? আমি ১৭ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার কাজ করেছি তার হিসেব দিয়েছি। গত তেরো বছরে কি কাজ হয়েছে সেটার হিসাব তৃণমূল প্রার্থী দিক।সিপিএম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষ বলেন, মাস্টার প্ল্যান করার কথা ছিল। তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা ও রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা থাকা দরকার তাতে দুটো সরকারের সমস্যা সমাধানের যে ইতিবাচক ভূমিকা থাকা দরকার সেটা তাদের নেই। তৃণমূল শুধু প্রতিশ্রুতি দেয় ।আগে তৃণমূলের যিনি সংসদ ছিলেন তিনিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিছুই হয়নি। তৃণমূল বিজেপি তারা শুধু পারস্পরিক তরজা করেছে।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)