মহিলা যাত্রীদের চুল কেটে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা! লোকাল ট্রেনে ফিরল ৭০ দশকের পুরনো আতঙ্ক
প্রতিদিন | ০৫ এপ্রিল ২০২৪
সুব্রত বিশ্বাস: সত্তর দশকের অপরাধের আতঙ্ক ফিরে এল ট্রেনে! ভিড়ের মধ্যেই মহিলাদের চুল অজান্তে কেটে নিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণির দুষ্কৃতীরা! এনিয়ে তুমুল আতঙ্ক ছড়াল লোকাল ট্রেনে (Local Train)। ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে শিয়ালদহে আরপিএফের (RPF) কাছে অভিযোগ এনেছেন বারুইপুরের বেসরকারি কলেজে পাঠরতা বাগুইআটির বাসিন্দা এক তরুণী। তবে তাঁর কাছে এখনও স্পষ্ট নয়, কী হয়েছিল বুধবার সন্ধেবেলা। মোটের উপর তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ওই তরুণী জানান, বাড়ি ফেরার সময় শিয়ালদহ (Sealdah) স্টেশন থেকে ৬.৫ মিনিটের নৈহাটি লোকালের মহিলা কামরাতে চড়েছিলেন তিনি। বাগুইহাটির বাসিন্দা ওই তরুণী বিধাননগরে নামেন বাড়ি যাবেন বলে। তিনি আরপিএফকে জানিয়েছেন, ওই কামরার ভিতরে হঠাৎই? চুলে টান লাগে, বেশ কয়েকবার। ভেবেছিলেন, ভিড় ট্রেনে কারওর হাত লেগে হয়ত চুলে টান লাগছে। এর পর বিধাননগর স্টেশনে নেমে তিনি ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সাবওয়ে দিয়ে হাঁটতে শুরু করেন। এবং হাঁটার সময়ও তিনি টের পেতে থাকেন, তাঁর চুলে তখনও অল্প অল্প টান অনুভব হচ্ছে। তাতে বেশ ঘাবড়ে যান তিনি। পিছনে ঘুরে দেখতে পান এক অল্প বয়সের যুবককে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কী হচ্ছে? তিনি কিছু করার কথা অস্বীকার করেন। ভয়ে ভয়ে বাড়ি ফেরেন তরুণী। চুলে হাত দিয়ে এর আগেই তিনি টের পেয়েছেন, মাথার গোছা-গোছা চুল উঠে আসছে হাতের মুঠোয়। আতঙ্কে (Panic) রাতে ঘুমাতে পারেননি।
এর পর সকালে নিজের জামাইবাবুকে জানান বিষয়টি। তিনি হাই কোর্টের আইনজীবী। এদিন তিনি ‘রেল মদতে’ বিষয়টি জানিয়ে অভিযোগ করেন। আরপিএফ শিয়ালদহে তরুণীকে ডেকে পাঠান। সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে চলন্ত ট্রেনে দেখা গেলেও, পিছনে কাউকে এমন কাজ করতে দেখা যায়নি। আরপিএফ এবার বিধাননগর (Bidhannagar) স্টেশনের ফুটেজ সংগ্রহ করছে। সেখানেই চিহ্নিত হতে পারে দুষ্কৃতী বলে আরপিএফ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রেনে এ ধরনের মহিলাদের চুল কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটত সত্তরের দশকে মাঝামাঝি সময়ে। বিশেষ করে বেণী কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটত। যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো, তা বেণীর একাংশে সুতো দিয়ে উপর-নিচ করে দু’টি বাঁধন দেওয়া হতো মহিলাদের অলক্ষ্যে। এর পর সেই বাঁধনের মাঝখানে কেটে দেওয়া হতো। কাটা বেণী নিচে পড়ে যেত না। ফলে টেরও পেতেন না ওই মহিলা। এই অপরাধে তখন বেশ আতঙ্ক ছড়ায় মেয়েদের মধ্যে।