• মাথা-ল্যাজা কিছুই হবে না! সিএএ নিয়ে তোপ মমতার
    এই সময় | ০৫ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি—দু’টি সভা থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কড়া ভাষায় বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সেই কোচবিহারের মাটিতে দাঁড়িয়েই সিএএ প্রসঙ্গে মমতার আক্রমণের জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।এদিন মোদী-মমতার এই তরজার মধ্যেই সিএএ ইস্যুতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রের বিদায়ী প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের একটি বক্তব্য ঘিরে। তাঁর হুঁশিয়ারি, তৃণমূলের লোকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। সিএএ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর বাগযুদ্ধের দিন শান্তনুর এই বক্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে (যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’)।

    মাস খানেক আগে সিএএ-র বিধি লাগু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে এ বারের ভোটের ইস্যুর তালিকায় উপরের দিকেই জায়গা করে নিয়েছে নাগরিকত্বের বিষয়টি। বিজেপি সিএএ লাগুর ঘোষণাকে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্য হিসেবে প্রচার করছে। পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূলও। তাদের দাবি, সিএএ-তে কেউ আবেদন করলেই তিনি বাংলাদেশি হয়ে যাবেন।

    এদিন কোচবিহারের সভা থেকে সে বিষয়ে বাংলার মানুষকে সতর্ক করে মমতা বলেন, ‘আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেই বাংলাদেশি হয়ে যাবেন। অর্থাৎ, আপনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবেন না, কন্যাশ্রী পাবেন না, ভোট দিতে পারবেন না। নাগরিকত্ব অধিকার হারাবেন। এটা ভালো না খারাপ, নিজেরাই বুঝে নিন। ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে। যেরকম অসমে রেখে দিয়েছে।’

    সিএএ আসলে কী সেটা ব্যাখ্যা করে মমতার সংযোজন, ‘ভোটের আগে ক্যা ক্যা করে চিৎকার করছে। মনে রাখবেন, ক্যা-টা মাছের মাথা। আর ল্যাজাটা হচ্ছে এনআরসি। এখন ওরা বলছে, পুরোহিত লিখে দিলেই হবে। এটা কোন আইনে আছে? পুরোহিত কীভাবে লিখে দেবেন? যাঁদের জন্মস্থান বাংলাদেশে, তাঁদের জন্ম সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে ওই দেশ থেকে?’

    তাঁর দাবি, ‘ক্যা হবে না। এনআরসিও হবে না। সবাই নিশ্চিন্তে থাকুন। আমি সুখের দিনে কুহু কুহু করে ডাকি না। দুঃখের দিনে পাশে থাকি।’ এদিন বিকেলে কোচবিহারে সভা করেন প্রধানমন্ত্রীও। সেখান থেকে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে মোদীও বলেন, ‘সিএএ ইস্যুতে বিরোধীরা আপনাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কারণ, বাম-কংগ্রেস আর তৃণমূলের রাজনীতি অপপ্রচারের উপরই দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আপনারা সে সব বিশ্বাস করবেন না।’

    মোদীর আশ্বাস, ‘আপনারা দশ বছর আমার কাজ দেখেছেন। মোদীর গ্যারান্টির উপর ভরসা রাখুন। দেশের প্রতিটি পরিবারকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’ নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার ঠিক আগে বাংলায় এক সপ্তাহে চারটি রাজনৈতিক সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সেখানে কোথাও তিনি সিএএ প্রসঙ্গে উচ্চবাচ্য করেননি।

    নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথম বাংলায় ভোট-প্রচারে এসেছিলেন নমো। আর কোচবিহারের সেই সভা থেকে সিএএ নিয়ে তাঁর মুখ খোলা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সিএএ নিয়ে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য।

    দু’দিন আগে গাইঘাটার পাঁচপোতায় নির্বাচনী পথসভা থেকে শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন, ‘একজন তৃণমূলের লোকেদের আমরা নাগরিকত্ব দেবো না। খ্যামটা নাচ কাকে বলে দেখিয়ে দেবো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে বাঁচায় দেখব।’ সেই ভিডিয়োই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এদিন।

    শান্তনুর দাবি, নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নে রাজ্য সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। জবাবে বনগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘এর থেকেই প্রমাণ হয়ে গেল, দেশ এবং বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত করছে বিজেপি।’
  • Link to this news (এই সময়)