CJI DY Chandrachud : ন্যায়ের কণ্ঠস্বর নরিম্যান, স্মরণে সশ্রদ্ধ সিজেআই
এই সময় | ০৫ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: তিনি নিজে মনে করতেন, আইন ঠিক ততটাই মস্তিষ্কের বিষয়, যতটা হৃদয়ের। সবচেয়ে জরুরি কমপ্যাসন--উৎপীড়িতের প্রতি সমানুভূতি। ভারতের আইনি ইতিহাসের সেই ‘গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান’ প্রয়াত ফলি এস নরিম্যান স্মরণে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চ রেফারেন্সে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বললেন, ‘নরিম্যান ছিলেন প্রকৃত অর্থে ভারতে ন্যায়বিচারের কণ্ঠস্বর। কঠিন সময়ে যখন অনেক মুখই বন্ধ থেকেছে, নরিম্যানের কণ্ঠ থেমে যায়নি। বিভ্রান্তির বিভিন্ন মুহূর্তে তাঁর ভূমিকার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। তাঁর স্মৃতি কোনও দিনই মোছা যাবে না।’বহু বিচারপতি এবং আইনজীবীর ‘মেন্টর’ নরিম্যান কোনও রায়ের পর্যালোচনায় কোনও রাখঢাক না-রেখে বরাবর নিজের ভাবনা স্পষ্ট করতেন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি মারা যাওয়ার কয়েক দিন আগেও নবতিপর নরিম্যানের চিঠি পেয়েছিলাম সাংবিধানিক বেঞ্চের একটি রায় নিয়ে। তাঁর স্মৃতি বরাবরই তাঁদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে যাঁরা ন্যায়ের জন্যে লড়াই করেন।’
প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, ফলি এস নরিম্যানের মূল্যবোধ, অদম্য সাহস, নীতির প্রশ্নে আপসহীন মনোভাব শুধুমাত্র আইনি পেশাকে নয়, ঋদ্ধ করেছে ভারতের বিবেককে। আইন-ক্ষেত্রে অগাধ পাণ্ডিত্যের সঙ্গেই ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে অবিচল থাকার বিষয়টি বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।
তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘জরুরি অবস্থার সময়ে দেশের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ছিলেন নরিম্যান। জরুরি অবস্থা ঘোষণা হতেই ইস্তফা দেন। জরুরি অবস্থা নিয়ে প্রশ্নেই তাঁর ওই সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ভাবনার মক্কেলদের হয়ে সওয়ালের সময়েও আইনজীবী হিসেবে আদালতের প্রতি দায়বদ্ধতাই বরাবর গুরুত্ব পেয়েছে তাঁর জীবনে।’
সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকার নিয়ে টিএমএ পাই জাজমেন্ট বা এলজিবিটিকিউ অধিকার নিয়ে নভতেজ সিং জোহার মামলায় নরিম্যানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও স্মরণ করেন প্রধান বিচারপতি। মুম্বইয়ের সরকারি ল কলেজ থেকে ১৯৫০-এ আইনে স্নাতক হওয়ার পর বম্বে হাইকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেছিলেন ফলি এস নরিম্যান। ’৭১ সালে সিনিয়র গাউন পান।
সে বছরই সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। অচিরেই দেশের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল হন, ’৭৫ সালে জরুরি অবস্থা জারির প্রতিবাদে সেই পদে ইস্তফা দেন। আবার নর্মদা বাঁধ মামলায় গুজরাট সরকারের কৌঁসুলির ভূমিকা থেকেও সরে আসেন সে রাজ্যে খ্রিস্টানদের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদে। সাত দশকের বেশি আইনি পেশায় সক্রিয় থাকা মানুষটি ছিলেন আইনজীবী এবং বিচারপতিদের কাছে সমান শ্রদ্ধেয়।