১৪০০ তরুণীকে বিয়ের টোপে ১৪ কোটি হাতসাফাই! ধরা পড়তেই কান ধরে ওঠবোস ২ মৌলানার
এই সময় | ০৬ এপ্রিল ২০২৪
কম টাকায় গরিব পরিবারের মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। এক, দুইজন নয় একই রকম প্রতারণার জাল পেতে শত শত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা। সর্বস্ব খুইয়ে মাথায় হাত প্রতারিতদের। বেশ কিছু দিন এমন প্রতারণা চক্র চালিয়ে বহাল তবিয়তেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল অভিযুক্তরা। সাঙ্গপাঙ্গ জুটিয়ে চলছিল প্রতারণা চক্র। তবে শেষরক্ষা হল না। শেষমেশ পুলিশের তৎপরতায় পাকড়াও প্রতারণাচক্রের মূল পাণ্ডা। হরিয়ানার নুহর মেওয়াতের ঘটনা।গরিব মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়ছিল পুলিশের কাছে। এক আধটা নয়, শ'য়ে শ'য়ে অভিযোগ জমা পড়ে। মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়ে প্রতারকদের খপ্পরে শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে মাথায় হাত পড়েছে শত শত দরিদ্র পরিবারের। পুলিশের অভিযোগ দায়ের হয়। তবে প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডাদের খুঁজে পেতে প্রথমের দিকে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে। শেষমেশ মূল অভিযুক্ত মৌলানা আরশাদ সহ তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে নাগিনা থানা পুলিশ। হেফজতে নিয়ে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তরা ভালো পরিবারের মেয়ের বিয়ে দেওয়ার নাম করে ১৪০০ জনের কাছ থেকে ১৪ কোটি টাকা প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। ধরা পড়ার পর থানার মধ্যে অভিযুক্তদের কান ধরে উঠবোস করানো হয়।
চাকরি দেওয়ার নামে ৭২ লাখের প্রতারণা! কী জানালেন পুলিশ সুপার?
নুহ থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই ওলানা মৌলানা আরশাদ ও রশিদের নামে অভিযোগ দায়ের হয় নাগিনা থানায়। অভিযোগ জানানো হয়, মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে চম্পট দিয়েছে তারা। কন্যাদান বাবদ বহু মানুষের থেকেই অভিযুক্তরা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, মোটরসাইকেল, সম্পূর্ণ বিয়ের সরঞ্জাম এবং ২১ হাজার টাকা হাতিয়ে চম্পট দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে নাগিনা থানার পুলিশ। অভিযুক্তদের পাকড়াও বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন সিং। গোপন সূত্র মারফতর খবর পেয়ে পুলিশ অভিযুক্ত রশিদকে বদকালী চক নাগিনা ও বুবলহেদী গ্রাম থেকে মৌলানা আরশাদকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, দুই অভিযুক্তই নুহতে মেয়েদের বিয়েতে কন্যাদান দেওয়ার নামে প্রতারণা করে মানুষের থেকে কোটি কোটি হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। দুই অভিযুক্তদের সাঙ্গপাঙ্গদের খুঁজতে ব্যস্ত পুলিশ।
তবে এ ঘটনা এক দু'দিনের নয়। দীর্ঘ সময় ধরেই ঠান্ডা মাথায় অপরাধের জাল বিস্তার করেছিলে অভিযুক্তরা। মেওয়াতের কাইথওয়াড়া থানা এলাকার নিমলাকা গ্রামের সাইকুল নামে এক ব্যক্তির হাত ধরেই শুরু হয়ে প্রতারণা চক্রের জাল বিস্তার। রাজস্থান থানার পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। কম টাকায় যৌতুকের জিনিস কেনার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে মেয়ের পরিবারকে, এই টোপ দিয়েই একাধিক পরিবারকে ফাঁসায় অভিযুক্তরা। পুলিশের চোখে যাতে অপরাধের বিষয়টিও ধরা না পড়ে তার জন্য দু'একবার গণবিবাহের আয়োজনও করে অভিযুক্তরা। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরও এতে আমন্ত্রণ জানায় তারা। এভাবেই ধীরে ধীরে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে অভিযুক্তরা। আর কিছু দিন পর থেকেই শুরু হয় প্রতারণার আসল 'খেলা'। একাধিক জনের থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রশদি ও মৌলানার আরশাদের খোঁজ পায় প্রতারিতরা। সেই সূত্রের তাদের খোঁজ পায় পুলিশ।