• ৩ জনেই হেরেছিলেন বিধানসভায়, 'প্রেস্টিজ ফাইট' দেখতে চলেছে যাদবপুর
    আজ তক | ০৬ এপ্রিল ২০২৪
  • Jadavpur Lok Sabha Constituency: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রেস্টিজ ফাইট দিতে চলেছে যাদবপুর কেন্দ্র।  নির্বাচন ২০২৪-এ পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনে নির্বাচন। কলকাতা জেলার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের দু'টি যাদবপুর ও টালিগঞ্জ এবং বাকি পাঁচটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। গত লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এ তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ৬,৮৮,৪৭২ ভোটে জয়ী হন। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরাকে ৩,৯৩,২৩৩ ভোটে হারান। বামেদের তরফে প্রার্থী ছিলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, তিনি ভোট পান ৩,০২,২৬৪।

    লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-এ যাদবপুর কেন্দ্রে প্রার্থী কারা?
    সাংসদ হওয়ার লড়াইয়ে যাদবপুর কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের প্রার্থী যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। অন্যদিকে, সিপিএমের হয়ে লড়ছেন সৃজন ভট্টাচার্য। এই কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রার্থী ড. অনির্বাণ গাঙ্গুলি। 

    যাদবপুর কেন্দ্রের পরিচিতি 
    যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছে ১৮,১৬,৮৫৭। ২০১৯ সালে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৪,৩৬,৮৯৪। ২০১৯ সালে মোট ৭৯.০৯ শতাংশ ভোট গৃহীত হয়েছিল। এই লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮, এরপর ১৯৯৮ থেকে ১৯৯৯ এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সালে তিনবার প্রয়াত রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী কৃষ্ণা বসু এই কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। তিনি শিশির কুমার বসুর স্ত্রী ছিলেন। তার আগে কংগ্রেস ও বামেদের হাতে ছিল যাদবপুর। ২০০৪ সালে ফের বামেদের দখলে যায় যাদবপুর লোকসভা। এরপর ২০০৯ সাল থেকে তৃণমূলই এই কেন্দ্রের দখল নিয়েছে।

    সায়নী vs সৃজন vs ড. অনির্বাণ গাঙ্গুলির লড়াই
    এবার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে যে তিন প্রার্থী লড়ছেন তাঁরা সকলেই প্রতিটি নির্বাচনে পরাজিত হন। গত বিধানসভায় সায়নী ঘোষ আসানসোল-দক্ষিণ থেকে ভোটে দাঁড়ান। তবে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পলের কাছে তিনি পরাজিত হন। পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অব্যাহতি হলে তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের যুব শাখার সভাপতি করা হয়।

    সৃজন ভট্টাচার্য শেষ বিধানসভা নির্বাচনে হুগলির সিঙ্গুর থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। তৃণমূলের বেচারাম মান্না, বিজেপির রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। তবে জয়ী হননি। বেচারাম মান্নার কাছে তিনি হেরে যান। এবার নিজেরই কেন্দ্র যাদবপুর থেকে লড়ছেন তিনি। 

    ড. অনির্বাণ গাঙ্গুলি বোলপুর-শান্তিনিকেতন বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ৯৪ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তিনি। তিনি ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশন, ভারতীয় জনতা পার্টির নয়াদিল্লি ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। তিনি বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ইউনিটের কোর কমিটির সদস্য এবং জননীতি ও রাজনৈতিক গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন।

    গত লোকসভাগুলির ইতিহাস 
    এই যাদবপুর কেন্দ্রের একবারের সাংসদ (১৯৮৪-১৯৮৯) ছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসে থাকাকালীন এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন তিনি। তার আগে প্রয়াত সিপিআইএম নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এই কেন্দ্রে দু'বার সাংসদ ছিলেন। তারপর সিপিএম নেত্রী ডঃ মালিনী ভট্টাচার্য দু'বার যাদবপুর থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর কৃষ্ণা বসু এই কেন্দ্রের দুবারের সাংসদ ছিলেন। তাঁর পুত্র সুগত বসু। এরপর সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই কেন্দ্রে জয়লাভ করেন। এরপর তৃণমূলের হয়ে জয়লাভ করেন কবীর সুমন। তিনি টানা ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি এই কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। এরপর ২০১৪-২০১৯ পর্যন্ত কৃষ্ণা বসুর পুত্র সুগত বসু জয়ী হয়ে সাংসদ হন। ২০১৯-এর লোকসভায় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী এই লোকসভা কেন্দ্রের টিকিট পেয়ে জয়ী হন।

    যাদবপুর বরাবরই হেভিওয়েট কেন্দ্র। শিক্ষিত বাঙালির গড় বলে পরিচিত এই কেন্দ্র। দুই তরুণ তুর্কি প্রার্থীর সঙ্গে বিজেপির অনির্বাণ গাঙ্গুলি, তিন প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কে জয়ী হন, তা জানা যাবে ৪ জুন।  
  • Link to this news (আজ তক)