• India Maldives Row: ঝগড়া ভুলে মালদ্বীপকে চাল, গম পাঠাবে ভারত
    এই সময় | ০৬ এপ্রিল ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: মালদ্বীপের চিনপন্থী হাবভাবে বেজায় ক্ষুব্ধ ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লক্ষদ্বীপ সফর নিয়ে মালদ্বীপের মন্ত্রীদের বিতর্কিত মন্তব্য দু’দেশের সম্পর্ককে আরও তিক্ত করেছে। মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর ভারত-বিদ্বেষী নীতির কারণে দ্বীপরাষ্ট্রটি থেকে সেনা সরিয়ে নিতেও বাধ্য হয়েছে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতেও বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিল ভারতই। শুক্রবার ভারত ঘোষণা করল, চিনি, গম, চাল পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মালদ্বীপে রপ্তানি করবে তারা।

    দীর্ঘদিন ধরেই মালদ্বীপে চাল, চিনি এবং পেঁয়াজের অন্যতম রপ্তানিকারক ভারত। কিন্তু দেশের অন্দরে সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে রপ্তানির উপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ চাপিয়েছে ভারত। নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে রপ্তানির পরিমাণ। কিন্তু মালদ্বীপের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেই নিয়ন্ত্রণ বলবৎ থাকছে না, জানিয়ে দিল নয়াদিল্লি।শুক্রবার এক নির্দেশিকায় ভারত সরকার জানিয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থেকে বাদ রাখা হচ্ছে মালদ্বীপকে। আপাতত ঠিক হয়েছে ১,২৪,২১৮ টন চাল, ১,০৯,১৬২ টন ময়দা, ৬৪,৪৯৪ টন চিনি, ২১,৫১৩ টন আলু, ৩৫,৭৪৯ টন পেঁয়াজ এবং ৪২৭৫ লক্ষ ডিম মালদ্বীপে পাঠাবে ভারত।

    ভারতের হাই কমিশনার সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, এই রপ্তানির সিদ্ধান্ত দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে। ১৯৮১ সালের পর থেকে মালদ্বীপে রপ্তানির কোটা ধাপে ধাপে বাড়িয়েছে ভারত। তবে, রপ্তানির উপর ক্যাপিংয়ের নিষেধাজ্ঞা মালদ্বীপের ক্ষেত্রে তুলে নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, মালদ্বীপের চিনপন্থী প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু গত বছর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মালদ্বীপের ভারতের প্রভাব খর্ব করার সব রকম চেষ্টা শুরু করেছেন।

    মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন মুইজ্জু। ক্ষমতায় এসেই ভারতের সেনা সরানোর ফরমান পাঠিয়েছেন। সম্প্রতি মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহারও করে নিয়েছে ভারত। সম্প্রতি বাণিজ্যিক, বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে চিনের দিকে ঝুঁকেছেন মুইজ্জু। এর ফলে মালদ্বীপ আদতে চিনের ঋণের ফাঁদে পড়তে চলেছে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মালদ্বীপের বিরোধী দলের নেতারা, কিন্তু তাতেও মুইজ্জুর নিজের অবস্থান থেকে সরেননি।

    উল্টে মালদ্বীপে ভারত দাদাগিরি চালানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ভারতের রপ্তানি বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তকে ভারতের মোক্ষম চাল হিসেবেই দেখছে কূটনৈতিক শিবির। কারণ, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত বরাবরই দাবি করেছে, প্রতিবেশীদের ক্ষেত্রে বরাবরই সুসম্পর্ক রাখার পক্ষপাতী নরেন্দ্র মোদীর দেশ।
  • Link to this news (এই সময়)