নব্যেন্দু হাজরা: রাস্তাঘাট, যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা নাগরিকের প্রাথমিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। নিজে হাতে পরিষ্কার করতে না পারলে অন্তত নিজে থেকে নোংরা করবেন না, এই আর্জি তো থাকেই। কিন্তু রাস্তায় বেরলে দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা মাথায় রাখেন কজনই বা? তাই তো বার বার পরিবহণ দপ্তরের তরফে যাত্রীদের তা মনে করিয়ে দিতে হয় রীতিমতো ঘোষণা করে। তবুও কি সুরাহা মেলে? মোটেই নয়। এবার তাই মদ্যপান করে গাড়িতে ওঠা কিংবা স্টেশন চত্বর থুতু, পানের পিকে অপরিচ্ছন্ন যাতে না হয়, তার জন্য কলকাতা মেট্রোর (Kolkata Metro)বিজ্ঞাপনী হাতিয়ার ফেলু মিত্তির! নতুন তৈরি হাওড়া-এসপ্ল্যানেড মেট্রো রুটে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সেই বিজ্ঞাপনেই জনসচেতনতা চলছে। পাশাপাশি আনা হচ্ছে অ্যান্টি-লিটারিং ডিভাইস।
গত মাসে কলকাতা মেট্রোর নতুন রুট চালু হয়েছে হাওড়া (Howrah) থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। তার বিশেষ চমক গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রোপথ। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পাশাপাশি এখানকার স্টেশনগুলিও অত্যন্ত ঝাঁ চকচকে। নিত্যযাত্রীদের স্রেফ গঙ্গার নিচে মেট্রো চড়ার অভিজ্ঞতার জন্য অনেকেই এই রুটে যাতায়াত করছেন। একমাসও হয়নি নতুন রুট চালু হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে, স্টেশনগুলির সৌন্দর্যহানি ঘটেছে। কোথাও পান-গুটখার পিকের স্থায়ী ছাপ, কোথাও প্লাস্টিকের বোতল পড়ে। এছাড়া স্টেশন চত্বরে কুকীর্তি তো আছেই।
এসব রুখতে কলকাতা মেট্রো নতুন এক প্রযুক্তি আনছে। শুক্রবার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (CPRO) কৌশিক মিত্র বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, অ্যান্টি লিটারিং ডিভাইস লাগানো হচ্ছে। যার মাধ্যমে কেউ কোনও দুষ্কর্ম করলে তা সহজেই ধরা পড়বে এবং সেইমতো জরিমানা দিতে হবে শাস্তি হিসেবে। ন্যূনতম ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। এই পদ্ধতি চালু হচ্ছে মেট্রোর গ্রিন লাইন অর্থাৎ হাওড়া-এসপ্ল্যানেড রুট এবং ব্লু লাইন অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ রুটে। কাউকে মেট্রো চত্বর অপরিচ্ছন্ন করতে দেখলেই হাতেনাতে ধরে ফেলবে নয়া ডিভাইস।
আর সেখানেই বিজ্ঞাপনের চমক মেট্রো কর্তৃপক্ষের। ফেলু মিত্তিরের গোয়েন্দা দৃষ্টিতে ধরা পড়ার পর অপরাধী কার্যত মুচলেকা দিচ্ছে, আর কখনও ভুল হবে না। এই বিজ্ঞাপনে যদি সতর্ক হন যাত্রীরা, এটাই আশা। কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের মতে, কম খরচে শহরের পরিবহণকে ত্বরান্বিত করার দায়িত্ব যেমন মেট্রো রেলের, তেমনই যাত্রীদেরও দায়িত্ব তার রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্য করা।