ভূপতিনগরের ঘটনায় এক সুর বিরোধীদের, কমিশনকে পদক্ষেপের আবেদন শুভেন্দুর
এই সময় | ০৬ এপ্রিল ২০২৪
ফের রাজ্যে কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর হামলা। বিস্ফোরণ কাণ্ডে তদন্ত করতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের ‘হামলা’র মুখে পড়তে হল NIA আধিকারিকদের। ঘটনা প্রসঙ্গে এক সুর বিরোধীদের গলায়। রাজ্যে আইনের শাসন কোথায়? প্রশ্ন তুলল বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস। ‘পুরোটাই পরিকল্পিত’ বিজেপিকে পালটা আক্রমণ তৃণমূল কংগ্রেসের।পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর বোমা বিস্ফোরণের তদন্তে গিয়ে একাংশ গ্রামবাসীর হামলার মুখে পড়েন এনআইএ আধিকারিকরা। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শেখ শাহজাহানের খোঁজে সন্দেশখালিতে গিয়ে গ্রামবাসীদের আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা । ঘটনায় তিনজন ইডি আধিকারিকের মাথা ফাটে। মাটিতে ফেলে মারধর করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর কয়েকজন জওয়ানকেও।
দুটি ঘটনাকে সামনে রেখে ফের রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূলকে লক্ষ্য করে আক্রমণের সুর চড়িয়েছে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলায় যে আইনের শাসন নেই, তা এঘটনা থেকেই স্পষ্ট। আদালতের নির্দেশে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিএসএফের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এর পরেও কী শান্তির ভোট সম্ভব?’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘রাজ্য পুলিশের ডিজি, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার-সহ পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন নির্বাচন কমিশনে আমি আবেদন জানিয়েছি।’
অন্যদিকে, এই ঘটনায় রাজ্যের দিকেই আঙুল তুলেছে সিপিএম। সিপিএমের রাজ্য নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘সন্দেশখালির ঘটনায় রাজ্য অপরাধীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। ভূপতিনগরেও হামলার শিকার হলেন এনআইএ আধিকারিকরা। এই অসভ্যততা চলতে পারে না। এর বিহিত প্রয়োজন।’ একই সুরে কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘গুন্ডাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তা না হলে এনআইএ-র মতো জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তাদের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস ওরা পায় কী করে?’
যদিও ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির ‘ষড়যন্ত্র’ দেখছে শাসকদল তৃণমূল। বিজেপি নেতারা NIA আধিকারিকদের সঙ্গে কিছুদিন আগেই বৈঠক করেছিলেন বলে দাবি করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি, গত সপ্তাহেই সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছিলেন, সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির পর এবার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে ভোটের আগে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এদিনও ঘটনার পর কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আমি আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম। বাস্তবে হলও তাই। খেয়াল করে দেখুন, কেন্দ্রীয় এজেন্সি স্থানীয় থানার পুলিশকে জানাল না, অথচ একাংশ মিডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় ঢুকল। এতেই তো সবটা পরিষ্কার!’ তাঁর কথায়, আসলে বিজেপি চাইছে এজেন্সিকে দিয়ে ভোটের মুখে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করতে। তৃণমূলের বক্তব্য, পরাজয় নিশ্চিত জেনেই ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে সামনে রেখে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।