রাম নবমীর শোভাযাত্রা নিয়ে কড়াকড়ি হাওড়া পুলিশের, হাইকোর্টে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ
এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৪
লোকসভা নির্বাচনের আবহে চলতি বছরে রাম নবমীর শোভাযাত্রা নিয়ে কড়াকড়ি হাওড়া পুলিশের। গত দুবছর রামনবমীর শোভাযাত্রা উপলক্ষ্যে ব্যাপক গন্ডগোলের পরিপ্রেক্ষিতে এবারে হাওড়া সিটি পুলিশের পক্ষ থেকে জিটি রোড দিয়ে ওই শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদিও অনুমতি না মেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে উদ্যোক্তারা। তারা এ ব্যাপারে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।আগামী ১৭ তারিখ রামনবমীর শোভাযাত্রা হওয়ার কথা। প্রতিবছরের মতো এবারেও শিবপুর কাজীপাড়ার কাছে নরসিংহ মন্দির থেকে জি টি রোড হয়ে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত শোভাযাত্রা আয়োজন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ,অঞ্জনি পুত্রসেনা এবং অন্যান্য হিন্দু সংগঠন। এ ব্যাপারে গত দুমাস ধরে তারা হাওড়া সিটি পুলিশের কাছে মিছিলের অনুমতির জন্য আবেদন করে। কিন্তু বেশ কয়েক দফা পুলিশের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হলেও এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে আগের রুটের তাদের লিখিত কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পুলিশের পক্ষ থেকে শোভাযাত্রার রুট পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হাওড়ার সভাপতি ইন্দ্রদেও দুবে জানান, ওই শোভাযাত্রা জিটি রোড দিয়ে না গিয়ে ফরশোর রোড দিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশের পক্ষ থেকে। এছাড়া আরো বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। যেমন দুশো জন অংশগ্রহণকারী ও চল্লিশ জন ভলান্টিয়ার ছাড়া কেউ থাকতে পারবে না শোভাযাত্রায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেতে হবে। কিন্তু পুলিশের এই প্রস্তাব মানতে নারাজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
সভাপতি জানান, মাত্র দুশো মিটার রাস্তায় ঝামেলা হয়। অথচ সেখানে শান্তি বজায় রাখতে ব্যর্থ পুলিশ। উল্টে তাদের শোভাযাত্রায় শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বলেই পুলিশ ও সরকার এই নির্দেশ দিচ্ছে। তাঁদের ফরশোর রোড দিয়ে শোভাযাত্রা নিয়ে যেতে বলছে। কিন্তু ওই রোড পুরোপুরি ফাঁকা। তাই তারা ওই রোড দিয়ে যাবেন না। ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। আদালতের উপর আস্থা আছে বলে জানান কার্যকর্তারা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের পর ২০২৩ সালেও রামনবমীর শোভাযাত্রাকে ঘিরে শিবপুর এবং হাওড়া থানা এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ এবং গন্ডগোলের ঘটনা ঘটে। শিবপুরের পিএম বস্তি এবং চওড়া বস্তি এলাকায় শোভাযাত্রা এগোনোর সময় পাথর ছোঁড়ার পাশাপাশি জি টি রোডের দু পাশে একাধিক দোকানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট চালানোর ঘটনা ঘটে। একাধিক বাইক এবং গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। গতবার সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রাজ্য পুলিশের তদন্তভার হাইকোর্টের নির্দেশে এনআইএ হাতে যায়।
রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘নির্বাচন ঘোষণার কারণে প্রশাসন এখন পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। এখানে রাজ্য সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। এমনকি তাদেরও ওই এলাকা দিয়ে মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।’ তাঁর কথায়, যে কেউ হাইকোর্টে যেতে পারেন। তবে গত দুবছর গন্ডগোলের প্রেক্ষিতে তার আশা বিচারপতিরাও গোটা ঘটনা বিবেচনা করে দেখবেন।