ঠা-ঠা রোদ উপেক্ষা করে অগ্রদ্বীপের মেলায় প্রার্থীরা
এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৪
অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, কাটোয়া : জনতা জনার্দন। অন্তত নির্বাচনের তরী পার করতে আমজনতার কাছে মাথা নত করতেই হয়। তাতে কোনও ফাঁকি রাখছেন না প্রার্থীরা। আর সেই লক্ষ্যে অগ্রদ্বীপের গোপীনাথের মেলাকে টার্গেট করেছেন তাঁরা। জনসংযোগের এত বড় মঞ্চ আর কোথায়।বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে অগ্রদ্বীপের গোপীনাথ মেলা। শুক্রবার ছিল মেলার মূল উৎসব। এদিন সকাল থেকে গনগনে রোদ। তার উপর ভাগীরথীর বালিতট সূর্যের আঁচে একেবারে তেতে ছিল। কিন্তু, সেই রোদ, গরম উপেক্ষা করেই মেলায় হাজির হন বর্ধমান পূর্ব লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার ও বিজেপির অসীম সরকার।
ভিড়ে ঠেলে ঘেমে নেয়ে এদিন গোপীনাথের পুজো দেন দুই প্রার্থী। দু’বার পুজো দেন শর্মিলা সরকার। প্রার্থীরা জানান, অগ্রদ্বীপ পুণ্যক্ষেত্র, তাই পুজো দিতে হাজির হয়েছেন তাঁরা। যদিও নির্বাচনে জনসংযোগ মূল লক্ষ্য হলেও রাজনীতি নিয়ে কেউ কোনও বলেননি। এদিন বেলা ১২টা নাগাদ গোপীনাথ মন্দিরে হাজির হন বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার। মাথায় পুজোর ডালি নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন তিনি।
কিছুক্ষণের মধ্যেই পুজো দিয়ে মন্দির থেকে বেরিয়ে যান তিনি। মন্দির চত্বরেই ছিল বিজেপির ক্যাম্প। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়ে বেরিয়ে যান প্রচারের কাজে। অসীম বলেন, ‘এখানে আমি আগেও কবিগান করে গিয়েছি। এটা পুণ্যক্ষেত্র। ধর্মস্থানে রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা বলব না।’ ছন্দের সুরে বলেন, ‘এই চত্বরে রাজনীতির কোনও কথা ভাই, ধর্মস্থানে এসে আমার বলার ইচ্ছে নাই।’
প্রায় একই সময়ে মেলা চত্বরে হাজির হন তৃণমূলের শর্মিলা সরকার। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী তথা অগ্রদ্বীপ অঞ্চল তৃণমূলের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে একবার মন্দিরে পুজো দিয়ে আসেন তিনি। তৃণমূল ক্যাম্প থেকে প্রসাদও বিতরণ করেন। এর পর রাজ্যর মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে মাথায় ডালা নিয়ে ফের পুজো দিতে যান তিনি। শর্মিলাও এদিন রাজনীতির কথা তেমন কিছু বলতে চাননি।
তিনি অগ্রদ্বীপেরই মেয়ে। বলেন, ‘এই মেলায় আসা আমার কাছে নতুন কিছু নয়। ছোট থেকেই এই মেলা দেখে বড় হয়েছি।’ স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘আজ তো প্রথম নয়, বিগত প্রায় ২৫ বছর ধরে গোপীনাথের টানে ছুটে আসি। ভোট থাক বা না থাক আমার কামাই নেই। এখানে আমার নিজের আখড়াও আছে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে পূর্বস্থলীর পাটুলি স্টেশন বাজার এলাকায় গান শুনিয়ে প্রচার করেন অসীম সরকার। হরিণঘাটার এই বিধায়ক এবার সাংসদ পদে প্রার্থী। তিনি জানান, এবার তাঁর ঘোষিত সম্পত্তির পরিমাণ গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় ৮৮ লক্ষ টাকা কম। কেন সম্পত্তির পরিমাণ কমল, তার ব্যাখ্যাও দেন অসীম।
বলেন, ‘বিধায়ক হওয়ার পর ২ বছর কোনও অনুষ্ঠানের পারমিশন দেওয়া হয়নি আমাকে। ৮৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বিক্রি করতে হয়েছে আমার এই দলবল, সংসার নিয়ে বেঁচে থাকতে।’ শুক্রবার কাটোয়া শহরের একাধিক এলাকায় প্রচার সারেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের বামপ্রার্থী নীরব খাঁ। তাঁর প্রচারে জনসমাগম ছিল ভালোই।