এই সময়: সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তার কারণে কি ভোটের বাজারে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনের চাহিদা কমছে? লোকসভা ভোট ঘোষণা হলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনের বিক্রিবাটা এখনও সেভাবে শুরুই হয়নি। দোকানদাররা পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও খদ্দেরের দেখা নেই। তাই চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদের কপালে।
প্রতিবারই ভোটের সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন, টি-শার্ট, শাড়ি, টুপি, ব্যাগ সহ বিভিন্ন প্রচার সামগ্রী বিক্রি হয়। ভোট ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই তার অর্ডার পেতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এবার লোকসভা ভোট ঘোষণার পরে বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনের তেমন চাহিদা নেই।ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, যতদিন যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনের ব্যবহার কমাচ্ছে। ভোট প্রচারের জন্য তারা আরও যে সব মাধ্যম রয়েছে সেগুলো বেশি করে ব্যবহার করছে। কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালাচ্ছে, কেউ ভোটারদের মোবাইলে এসএমএস কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠাচ্ছে। এমনিতে ভোটের সময়ে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নানা বিধিনিষেধ থাকে।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও রাজনৈতিক দল অথবা দলীয় প্রার্থী ভোটের সময় সরকারি সম্পত্তির উপর ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন টাঙাতে পারেন না। অন্য কোথাও টাঙাতে গেলেও বাড়ির মালিকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। এই কাজে ঝক্কি বেড়ে যাওয়ায় অনেকে ফ্ল্যাগ ফেস্টুনের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন।
দীর্ঘ বছর ধরে ভোটের ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন বিক্রি করছেন ওল্ড চায়না বাজারের দোকানকার দেবাশিস পালোধি। তিনি বলেন, ‘সেভাবে অর্ডার না আসায় আমরা বেশি করে মাল তুলতে পারছি না। হোলির পরে হয়তো বিক্রিবাটা বাড়তে পারে।’ বড়বাজারের ব্যবসায়ী সুরজ সাউ জানাচ্ছেন, ভোটের সময় আগে যে পরিমাণে ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন বিক্রি হতো, এখন আর হয় না।
ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন কেনার জন্য সব দলই বাজেট কমাচ্ছে। এখন একটা ছোট ফ্ল্যাগ কিনতে খরচ পড়ে ৫-৬ টাকা। বড় মাপের ফ্ল্যাগ হলে তার দাম পড়ে ৩০-৩৫ টাকা। ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সিম্বল দেওয়া শাড়ি, পাঞ্জাবি বিক্রির চল রয়েছে বাংলায়। তিনরকমের শাড়ি পাওয়া যায়। রোটো যেটা, তা কটনের হালকা সিফন শাড়ি।
আর রয়েছে পিওর কটন। যার দাম পড়ে ১২০-১২৫ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ পর্যন্ত। ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন, শাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকে পিছপা হচ্ছেন। সুরজের কথায়, ‘এখনও পর্যন্ত বিক্রিবাটার যা ট্রেন্ড তাতে তৃণমূলের ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনের চাহিদাই সবথেকে বেশি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। সিপিএম-কংগ্রেস রয়েছে অনেক পিছনে।’
বিক্রিবাটা যাই হোক না কেন, ভোটের বাজার ধরতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে ই-কমার্স সংস্থাগুলি। অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক এবং লোগো আঁকা ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন, টি-শার্ট, নোটবুক, স্টিকার, টুপি, পেন, কাপ সহ হরেক সামগ্রী।
দলীয় প্রতীক ছাড়াও তাতে মোদী কি গ্যারান্টি, মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়, ফির একবার মোদী সরকারের মতো বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক স্লোগান চোখে পড়ছে।