নয়াদিল্লি: চার থেকে ছ'লক্ষ টাকা করে 'ডিল' হতো একেক জনের। তার পরেই কালোবাজারে পণ্য হিসেবে সদ্যোজাতকে বিক্রি করে দিয়ে যেত কেউ বা কারা। খাস রাজধানীর বুকে এমনই একটি নিউবর্ন ট্র্যাফিকিং র্যাকেটকে ধরেছে সিবিআই। উদ্ধার হয়েছে দুই সদ্যোজাত। বাকিদের খোঁজ চলছে। তবে, এই চক্র যে শুধু দিল্লিতে নেই ছডি়য়ে আছে দেশের সর্বত্র তা নিয়ে এক রকম নিশ্চিত। দশ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিবিআই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে, যার মধ্যে শিশু বিক্রি করা চক্রের লোক এবং ক্রেতা সকলেই রয়েছে।সিবিআইয়ের এক সূত্রের দাবি, এক মাসেই ১০টি সদ্যোজাতকে বিক্রি করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই দিল্লির কেশবপুরম এবং দিল্লি-এনসিআরে এই পাচার চক্র ধরতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
বেশ কিছু দিন ধরেই শিশু পাচার সংক্রান্ত খবর পাচ্ছিল সিবিআই। সেই সূত্র ধরে একটি এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে। তার পরই তল্লাশি অভিযানে নামে সিবিআই। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লির দ্বারকা, উত্তর-পশ্চিম দিল্লি, রোহিণী এবং এনসিআরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযানে যায় সংস্থার একাধিক টিম।
সিবিআই জানিয়েছে, পণ্যের মতো সদ্যোজাতদের কালোবাজারি করা হত। শিশুদের ক্রেতা কারা, ধৃতদের জেরা করে তা জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বেশ কিছু বড় হাসপাতালও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আতশকাচের তলায় রয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা সামনে এসেছে, তা হলো, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নিঃসন্তান দম্পতিদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করা হতো। তার পর মোটা টাকা চুক্তি হতো। কখনও সারোগেটেড মায়েদের থেকে আবার কখনও হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাতদের চুরি করে বিক্রি করা হতো। অনেক সময়ে গরিব মহিলাদেরও টোপ দিয়ে তাঁদের সন্তানদের নিয়ে নিত ওই চক্রের লোকেরা।
গোপন সূত্রে সিবিআই খবর পাওয়ার পরই শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় কেশবপুরমে তল্লাশি অভিযানে যায় সিবিআইয়ের একটি দল। শনিবারেও এই তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ জনকে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এক হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়, কয়েক জন মহিলা এবং পুরুষ রয়েছেন।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই শিশুগুলিকে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। শুধু তাই-ই নয়, এই চক্রের সঙ্গে কোনও হাসপাতাল জড়িত কি না বা হাসপাতাল থেকে এই শিশুদের চুরি করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেশবপুরম ছাড়াও দিল্লি-এনসিআর থেকে আরও কয়েক জনকে গ্রেপ্তার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে এই চক্রের সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরেই দিল্লির কয়েকটি হাসপাতালে থেকে শিশুচুরির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। শিশু পাচারের মামলা সিবিআইয়ের কাছে পৌঁছতেই তল্লাশি অভিযানে নামে তারা।