গত কয়েকমাস ধরে রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রে রয়েছে সন্দেশখালি। শেখ শাহজাহানের গ্রেপ্তারির পর লাগাতার বিক্ষোভের আঁচ কিছুটা কমলেও এতদিন সন্দেশখালিতে ব্যাকফুটেই ছিল শাসকদল। নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর এলাকায় ছোট ছোট কর্মিসভা করলেও এই প্রথম দলের প্রার্থীর সমর্থনে বড় জনসভা করল তৃণমূল। এ দিন সন্দেশখালির রাজবাড়ি বাজারে তৃণমূলের জনসভায় জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এ দিন পাড়ায় পাড়ায় জনসংযোগ করেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। শনিবার দুপুরে বিজেপি প্রার্থীকে দেখা গেল দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার বিশপুর, বায়লানি ও ধরমবেড়িয়ায় বাড়ি বাড়ি প্রচার করতে।এ দিন বসিরহাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের সমর্থনে সন্দেশখালির রাজবাড়ি বাজার সংলগ্ন সুরেন্দ্র এফপি স্কুল মাঠে জনসভা করে তৃণমূল। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু, স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাতো, সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদের মতো দলের নেতারা। তবে জনসভায় অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি খোদ প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম।
এ দিনের জনসভায় সুজিত বসু বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে আজকের জনসভায় এত মানুষ এসেছেন তা দেখে বুঝতে পারছি তৃণমূলের প্রতি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সন্দেশখালির মানুষ এখনও ভরসা হারাননি।’ ভিড় দেখে আত্মবিশ্বাসী সুজিত বলেন, ‘সন্দেশখালির জনসভায় মানুষের ভিড় দেখেই বোঝা যাচ্ছে হাজি নুরুলের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।’
'সন্দেশখালির মা-বোনেরা আমাদের সঙ্গে আছেন' মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
পাশাপাশি দলের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মী সমর্থকদের মনোবল ভাঙতে বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি, সিবিআই, এনআইএ-কে ব্যবহার করছে। আপনারা নিজেদের শক্ত রাখুন।’ সন্দেশখালির আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র পাত্রপাড়া থেকে এ দিনের জনসভায় মানুষের আসা প্রসঙ্গে সুজিত বলেন, ‘আমাদের দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। সেটার সমাধান হয়ে গেছে, আবার মানুষ আসছে।’ সন্দেশখালিতে জনসভার আগে বসিরহাট টাউন হলে সুজিত বসু বসিরহাট শহর তৃণমূলের নেতা ও কাউন্সিলারদের নিয়ে বৈঠক করেন।
এ দিন সকালে হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার বায়লানি বাজারে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করেন রেখা। পরে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে বিশপুর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এলাকার বাসিন্দা মাধবী মণ্ডল বলেন, ‘সন্দেশখালির প্রতিবাদী রেখা পাত্র এসেছিলেন আমাদের পাড়ায়। গ্রামের সাধারণ ঘরের বৌ রেখাকে দেখে ভালো লাগল।’ বিশপুরের জনসংযোগ শেষে দুপুর ১২টা নাগাদ বিশপুর শিব মন্দিরে পুজো দেন রেখা। পরে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও গ্রামের বাসিন্দা, এই গ্রামের মা বোনের সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগলো। অনেকে আমাকে আশীর্বাদ করেন।’ রেখা বলেন, ‘গ্রামের রাস্তা ঘাট, নদীবাঁধের সমস্যার পাশাপাশি সুন্দরবনের মানুষের জন্য এলাকায় ভালো হাসপাতাল নেই। সেগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তৈরি হোক এটাই আমি চাই।’