• মধুসূদনের বাড়ি: হেরিটেজ তকমা খারিজ হাইকোর্টে
    এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে কলকাতার খিদিরপুর অঞ্চলে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘বাড়ি’র হেরিটেজ তকমা খারিজ করে দিল হাইকোর্ট। গত সপ্তাহে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় এই রায় দেওয়ার ফলে প্রায় সাত বছর ধরে চলা মামলার নিষ্পত্তি হলো। হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ কমিটি হেরিটেজ নিয়ে আদৌ কতটা রিসার্চ করে--সে প্রশ্নও উঠে গেল বলে মনে করছেন বিভিন্ন স্থাপত্য এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে চর্চাকারী গবেষকরা।হাইকোর্ট রায় দিতে গিয়ে বলেছে, উইকিপিডিয়া কোনও তথ্যপ্রমাণ হতে পারে না। কারণ তাতে যে কেউ যখন-তখন কিছু লিখতে বা মুছে দিতে পারে। সেই সঙ্গেই যে-সব বইয়ের তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার গ্রন্থপঞ্জি থেকে স্পষ্ট, সেগুলির কোনওটাই গবেষণাধর্মী নয়। ফলে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি হিসেবে ওই বাড়িকে হেরিটেজ তকমা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ না থাকায় পুরসভার হেরিটেজ কমিটির দেওয়া তকমা খারিজ করেছে আদালত।

    রাজ্য হেরিটেজ কমিশনও অবশ্য ২০১৭ নাগাদ ওই বাড়িটিকে হেরিটেজ তকমা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, হেরিটেজ তকমার পক্ষে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ নেই। তার আগেই যদিও খিদিরপুর অঞ্চলে ২০বি কার্ল মার্ক্স সরণির ওই বাড়িটিকে হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল পুরসভার কমিটি। পরের পছরই মামলা হয় হাইকোর্টে।

    সম্প্রতি সেই মামলায় আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী পুরসভার বই-নথি বিশ্লেষণ করে আদালতে দাবি করেন, ওই বাড়িকে মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণের পক্ষে যথেষ্ট গবেষণা নেই। তাঁর সেই যুক্তি মেনেই আদালত পুরসভার কমিটির দেওয়া তকমা খারিজ করেছে।

    যদিও ওই বাড়িটি মাইকেল মধুসূদনের বলে চিহ্নিত করতে বেশ কিছুদিন ধরে একদল গবেষক কাজ করছেন। গত বছর কলকাতা পুরসভার ‘পুরশ্রী’ পত্রিকায় একটি লেখায় ওই বাড়ির ঐতিহাসিক নথি নষ্ট করা নিয়ে সমালোচনাও করা হয় পুরসভার। হেরিটেজ কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘হাইকোর্টের রায়ে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবের কথা বলা হয়েছে। তবে আগামী দিনে যদি এই নিয়ে আরও তথ্যপ্রমাণ উঠে আসে, তখন বিষয়টিকে নতুন করে পর্যালোচনার সুযোগ থাকছে।’
  • Link to this news (এই সময়)