Lok Sabha Election: প্রার্থীর সমর্থনে ব্যালট পেপারে লিপস্টিক মাখা ঠোঁটের চুমু, কার জন্য এমন উন্মাদনা?
এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৪
লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু ভোটগ্রহণ। ভোট ঘিরেই প্রতিবার কত শত ঘটনা ঘটে প্রতিবার। ভাবছেন ভোট মানে আবার বেশ কিছু হিংসার শিরোনাম? না, তা কিন্তু নয়, ভোট ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে অনেক মধুর স্মৃতিও। গণতন্ত্রের এই শ্রেষ্ট উৎসবে প্রতিবারই শত শত ঘটনার জায়গা হয় ইতিহাসের পাতায়। ভালো-মন্দ সবটাই রয়েছে সে ইতিহাসে। খারাপ না হয় তোলা থাক, আলোচনা হোক মজার কিছু স্মৃতি নিয়ে।স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত যতবারই ভোট হয়েছে প্রতিবারই নজিরবিহীন মজার ঘটেছে বিস্তর। কাহিনি হয়ে সেই সব ঘটনা জমা হয়েছে স্মৃতির অলিন্দে। সেইরকম এক ঘটনা ঘটে ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে। সেবার বলিউডের সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন এলাহাবাদ আসন থেকে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ভারতীয় লোকদলের প্রবীণ নেতা হেমবতী নন্দন বহুগুনা। নির্বাচনে অমিতাভ বচ্চনের সামনে শোচনীয় পরাজয় হয়েছিল বহুগুণার। ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পর কংগ্রেসকে বিজয়ী করে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব পড়েছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর কাঁধে। মানুষের সমর্থন আদায়ে অমিতাভ বচ্চনকে এলাহাবাদ আসন থেকে প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস।
ব্যালট পেপারে মিলেছিল লিপস্টিকের দাগ
এদিকে তখন খ্য়াতির শীর্ষে অমিতাভ। তাঁর মহিলার অনুরাগী সংখ্য়া তখন আকাশছোঁয়া। যেখানে প্রচারে যাচ্ছেন সেখানেই উপচে পড়ছে ভিড়। অমিতাভকে একবার স্বচক্ষে দেখার আসায় ঠায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন সকলে। স্বপ্নের পুরুষ যখন ভোটে দাঁড়িয়েছেন তখন তো তাঁকে ভোট দিয়ে জেতাতেই হবে! বিপুল ভোট পড়েছিল অমিতাভের সমর্থনে। প্রথমবার ভোট ময়দানে নেমেই এত ভোট হাসিল করবেন অমিতাভ কল্পনাও করেননি নির্বাচনী আধিকারিকরা। তখন অবশ্য ভোট হত ব্যালট পেপারে। অমিতাভের সমর্থনের ভোট গুণতে গুণতে কার্যত হাঁপিয়ে উঠেছিলেন কর্মীরা। প্রথমবার ভোটে নেমেই এমন কামাল যে দেখাবেন তা বোধহয় কল্পনাতেও আসেনি। তবে অমিতাভের সমর্থনে পড়া চার হাজার ভোট বাতিল হয়েছিল। কারণটা জানেন? কারণ সেই সব ব্যালট পেপারে মিলেছিল মহিলাদের লিপস্টিকের দাগ। সেলুলয়েডের ওপারে থাকা স্বপ্নের মানুষটার সমর্থনে ভোট দিয়ে বহু মহিলা নিজের ভালোবাসাকে জাহির করতে লিপস্টিকের ছাপ দিয়েছিলেন ব্যালট পেপারে। আর তার জন্য চার হাজার ব্যালট পেপার বাতিল হয়েছিল। তাতে অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ধরাশায়ী করতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি অমিতাভের। এত কিছুর পরও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীয় লোকদলের দাপুটে নেত্রী হেমবতী নন্দন বহুগুনাকে পরাজিত করেছিলেন বিপুল মার্জিনে।
তবে অমিতাভারে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার খুবই সংক্ষিপ্ত। বেশিদিন রাজনীতির আঙিনায় থাকেননি তিনি। সরিয়ে নিয়েছিলেন অল্প কিছুদিনের মধ্য়েই। বোফর্স কেলেঙ্কারির উত্তাপে গান্ধী পরিবারের সঙ্গেও তার দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিনি লোকসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন। এরপর তিনি রাজনীতিকে বিদায় জানিয়ে বলেছিলেন, 'রাজনীতিতে প্রবেশ করা ভুল ছিল। আবেগে উদ্বেলিত হয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছিলাম। তখন বুঝলাম রাজনীতি প্রকৃত আবেগ থেকে আলাদা। অবশেষে তাই হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম।'