• 'তুমসে না হো পায়েগা...', রাহুলকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ প্রশান্ত কিশোরের
    এই সময় | ০৮ এপ্রিল ২০২৪
  • সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোরকে রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। পিকের উত্তর, 'মিস্টার গান্ধীকে বাস্তবটা বুঝতে হবে। তিনি এই মুহূর্তে নিজের দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। না পারছেন সরে আসতে, না অন্য কাউকে জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন। গত ১০ বছরে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তা সত্ত্বেও কোনও পরিবর্তন নেই তাঁর।'

    রাহুলকে টিপসপ্রশান্ত কিশোর মনে করছেন, এভাবে রাহুল গান্ধীর নিজের অবস্থানে থেকে যাওয়া অগণতান্ত্রিক। বিরোধীদের জন্য পুনরুত্থানের পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু, কয়েকজন নেতার সঙ্গে তাঁর মতের অমিল হওয়ার জেরে তিনি স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়িত করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।কেন ব্যর্থ রাহুল গান্ধী?প্রশান্ত কিশোরের মতে, 'আপনি যখন বিগত ১০ বছর ধরে একই কাজ করে যাচ্ছেন, অথচ কোনও সাফল্য আসছে না, তখন স্বেচ্ছাবসর নেওয়া উচিত। এটা কোনও পরাজয় নয়। আগামী পাঁচ বছরের জন্য অন্য কাউকে জায়গা করে দেওয়া উচিত আপনার। আপনার মাও তো তাই করেছিল।' ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর হত্যার পর সোনিয়া গান্ধী নিজে সরে দাঁড়িয়ে পি ভি নরসিমা রাওকে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসিয়েছিলেন। সে কথা রাহুলকে স্মরণ করালেন পিকে।

    কেন রাহুলের উপর ক্ষুব্ধ পিকে?পিকের কথায়, 'বিশ্বের তাবড় যোগ্য নেতাদের একটাই গুণ। তাঁরা জানেন নিজেদের গাফিলতি কোথায়। সেটা শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। রাহুল গান্ধী নিজেও সবটা জানেন বলে আমার ধারণা। কেউ আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না যদি না আপনি নিজে নিজের ভুলগুলিকে চিহ্নিত করতে পারেন। রাহুল মনে করেন তাঁর ভাবনাগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য কেউ না কেউ থাকবে। এটা অবাস্তব।'

    ২০১৯ সালে ওয়েনাডের সাংসদ দলের সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পিকে মনে করেন, 'খাতায় কলমে তা হলেও বাস্তবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। মুখে যা বলেছিলেন কাজে তা করেননি রাহুল। অন্য কাউকে নিজের জায়গাটি আদতে তিনি ছাড়েননি।'

    বিস্ফোরক দাবি করে প্রশান্ত কিশোর আরও বলেন, 'বহু কংগ্রেস নেতা গোপনে স্বীকার করবেন এখনও কোনও একটি আসন কিংবা কোনও প্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের নেই। এক্স ওয়াই জেডের থেকে অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত টুঁ শব্দটি করতে পারেন না কেউ।'

    নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া, ইডি-সিবিআইয়ের মতো এজেন্সি সহ একাধিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে কংগ্রেস পরাজয়ের সাফাই দেয়, যা আদতে অসথ্য। এমনটাই মনে করেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর কথায়, '২০১৪ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০৬ থেকে নেমে ৪৪ হয়েছিল কংগ্রেস। তখন কোনও কোনও এজেন্সির উপর BJP-র প্রভাব থাকার কথা নয়। আসলে ওদের পরিকাঠামোতেই গলদ রয়েছে।'

    ভারতের রাজনীতি থেকে মুছে যাবে কংগ্রেস?এ কথা মানতে নারাজ প্রাক্তন ভোটকুশলী। পিকের মতে, 'কংগ্রেস এমন একটি দল যা ভারতের রাজনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তা কোনওদিনও কেউ মুছতে পারবে না। কংগ্রেসের শেষ হয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ইতিহাসে বহুবার এমন ঘটেছে ধ্বংসস্তূপ থেকে ফের পুনরুত্থান হয়েছে কংগ্রেসের। সোনিয়া গান্ধীর হাত ধরে তেমনটা হয়েছে গত ২০০৪ সালে।'

    পরিবারতন্ত্র নিয়ে কী বললেন পিকে?স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনীতিতে পদবী গুরুত্ব পেত তবে তা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বোঝা হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন প্রশান্ত কিশোর। সে ক্ষেত্রে তিনি রাহুল গান্ধী, অখিলেশ যাদব, তেজস্বী যাদবকে একসারিতে দাঁড় করিয়েছেন। তাঁর মতে, 'BJP সবেমাত্র ১০ বছর ক্ষমতায় এসেছে। তাই এখনও এই অভিযোগে বিদ্ধ হয়নি। আগামীদিনে তাদের নেতাদের উপরও পরিবারের সদস্যদের নেতা-মন্ত্রী করার চাপ আসতে থাকবে।'
  • Link to this news (এই সময়)