• মাদক, লোডশেডিং, ইভিএমে চিপ! সতর্কবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
    এই সময় | ০৮ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: ভোটের মুখে বাংলার বিজেপি কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একইদিনে তৃণমূলকর্মীদের আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে নিষেধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট-প্রচারে বেরিয়ে মোদী-মমতার মতো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা পরস্পরকে বিঁধবেন এটাই প্রত্যাশিত।তার ফাঁকে নিজের দলের কর্মীদের তাঁরা কে কী বার্তা দিলেন, সেটাও কম তাৎপর্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। লোকসভা ভোটের দামামা বাজার অনেক আগেই বাংলা থেকে ৩৫টি আসন জেতার টার্গেট সুকান্ত মজুমদারদের দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। কিন্তু বাংলায় ঘাসফুলে ঢাকা মাটিতে দাঁড়িয়ে সেই ‘লক্ষ্যপূরণ’ হওয়া যে চাট্টিখানি কথা না, সেটাও বিলক্ষণ জানেন তাঁরা।

    তাই বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে তৃণমূলকে আক্রমণ করার পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর লক্ষ্যও নিয়েছেন মোদী। সেই লক্ষ্যে রবিবার রাজ্য বিজেপি নেতাদের নতুন লক্ষ্যমাত্রাও দিয়ে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার জলপাইগুড়ি লোকসভার বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায়ের সমর্থনে সভা করেন তিনি।

    সেখান থেকে মোদী বাংলার বিজেপি কর্মীদের লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে বলেন, ‘প্রতিটি পোলিং বুথে তৃণমূলের জামানত বাজেয়াপ্ত করতে হবে।’ তাঁর সংযোজন, ‘তৃণমূলের লোকরা ধরে নিয়েছে যে, তারাই শেষ কথা। লোকসভা নির্বাচনে ওদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে।’ এরপরই সুর চড়িয়ে মোদী বলেন, ‘কাউকে ভয় পাবেন না। পদ্মফুলে ছাপ দেবেন।’

    তবে রাজ্যের সব বুথে তৃণমূলের জামানত বাজেয়াপ্ত করার চ্যালেঞ্জটা যে বড্ড বাড়াবাড়ি ব্যাপার, ঘনিষ্ঠ মহলে তা স্বীকার করছেন বঙ্গ-বিজেপির অনেকেই। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘সব বুথে যে তৃণমূলের জামানত জব্দ হবে না, সেটাও মোদীজিও জানেন। আসলে উনি বুথস্তরে সংগঠনের উপর জোর দিতেই এ কথা বলেছেন।’

    এদিন পুরুলিয়ার লধুড়কাতে দলীয় প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর সমর্থনে ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে নির্বাচনী সভা থেকে মমতা তৃণমূল নেতৃত্বকে প্রচারে আরও বেশি সময় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘নেতৃত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের বলব প্রচারে আরও বেশি সময় দিতে হবে। নির্বাচনে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই।’

    বিজেপির বিরুদ্ধে এজেন্সি দিয়ে ভোট করানোর অভিযোগ তুলে দলের নেতা-কর্মীদের তৃণমূলনেত্রীর পরামর্শ, ‘যদি আপনার বুথ প্রেসিডেন্ট অথবা বুথ এজেন্টকে গ্রেপ্তার করে (কেন্দ্রীয় এজেন্সি), তা হলে বিকল্প হিসেবে দু’-তিনটে নাম ঠিক করে রাখতে হবে। ভোটবাক্সে নজর রাখত হবে।’

    তৃণমূল কর্মীদের তিনি এদিন বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, ভোটে জেতার জন্য বিজেপি সব করতে পারে। মমতার সতর্কবার্তা, ‘বিজেপি কিন্তু মাদক মিশিয়ে দিতে পারে, ভয় দেখাতে পারে, লোডশেডিং করে দিতে পারে। ইলেকশন বক্সে চিপও ঢুকিয়ে দিতে পারে। এগুলো যাতে করতে না পারে, সে দিকে নজর রাখতে হবে।’ যুযুধান দুই দলের দুই শীর্ষ নেতা-নেত্রীর আহ্বানে কর্মীরা ভোটের আগে কতটা চাঙ্গা এবং সতর্ক হন, এখন সেটাই দেখার।
  • Link to this news (এই সময়)