দিলীপ-শমীকের সঙ্গে ছবিতে, বুদ্ধদেব ‘কাদের লোক’? প্রশ্ন
এই সময় | ০৮ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে কার্যত নয়া মাত্রা যোগ করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অপসারিত’ ভিসি বুদ্ধদেব সাউ। তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের একটি ছবি হঠাৎই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিটির সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’।বুদ্ধদেব অবশ্য সেই ছবিকে অস্বীকার করেননি। আর এই ছবির সূত্র ধরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। রাজ্যপাল তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পরও বুদ্ধদেবকেই ভিসি হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। অফিসে না গিয়েও বুদ্ধদেব ভিসির জন্য বরাদ্দ ভাতা তুলছেন বলে অভিযোগ।
কিছুদিন আগে বুদ্ধদেব সাউকে নিয়ে একটি টুইট করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই বুদ্ধদেবের সঙ্গেই দিলীপ-শমীকের সাম্প্রতিক ছবি ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি আসলে ‘কাদের লোক’? ছবি প্রসঙ্গে বুদ্ধদেব অবশ্য বলেন, ‘দোলের আগে একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। আইনজীবীদের আমন্ত্রণে সেখানে দিলীপ ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই ছিলেন।’
তবে এতে বিতর্ক থামেনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী শিক্ষক নেতা পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, ‘বুদ্ধদেব প্রথমে তৃণমূল ছিলেন, তারপর শিক্ষক সংগঠন আবুটা এবং বিজেপির শিক্ষক সেলের নেতা। যাঁদের সঙ্গে তাঁর ছবি দেখা যাচ্ছে, সেই বিজেপি নেতাদের মধ্যে একজন যাদবপুরের ছাত্রীদের সম্পর্কে একাধিক বার কুৎসিত কথা বলেছেন। আসলে বুদ্ধদেব যাদবপুরের এক তৃণমূলের নেতার হয়ে বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করছেন। উনি সুবিধাবাদী রাজনীতি করেন। এই ছবি থেকে সেটা স্পষ্ট।’
গত বছর ডিসেম্বরে রাজ্যপালের অনুমতি না-থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্তন অনুষ্ঠান করেন বুদ্ধদেব। তাঁকে ভিসি পদে বসিয়েও সমাবর্তনের ঠিক আগে অপসারণ করেন রাজ্যপাল। রাজ্য পাল্টা চিঠি দিয়ে তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে বলে। পার্থপ্রতিমকে বিঁধে বুদ্ধদেব বলেন, ‘পার্থপ্রতিম একজন বিকৃতমনস্ক মানুষ। উনি চান, ক্যাম্পাসে কেবল সিপিএম থাকুক। বিজেপি-তৃণমূল-সহ বাকিরা মরে যাক। আমি তো সিপিএমের লোকেদের সঙ্গেও মেলামেশা করি, চা খাই। তখন তো তিনি এই প্রশ্ন তোলেন না!’
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার নেতা তথা যাদবপুরের ইংরেজি বিভাগের প্রধান মনোজিৎ মণ্ডল শিক্ষক সংগঠন জুটাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন পার্থপ্রতিমের বক্তব্যের সূত্রে। কারণ তিনি জুটার সম্পাদক। মনোজিতের বক্তব্য, ‘জুটার লোকেরাই সমাবর্তনের আগে রাজ্যপালকে খুঁচিয়ে বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। ছাত্রস্বার্থে বুদ্ধদেবকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছে রাজ্য। কিন্তু জুটার লোকেরা চায়নি সমাবর্তন হোক। তাই এ সব কথার কোনও মানে নেই।’
জুটা অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। মনোজিতের আরও দাবি, ক্যাম্পাসের সবাই জানেন যে বুদ্ধদেব সাউ বিজেপির শিক্ষক সেলের নেতা। এই বিতর্কের মধ্যে অবশ্য বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক বলেন, ‘আমরা কোনও বিভাজন করি না। রাজ্যপাল কেন ওঁকে সরিয়ে ছিলেন, সেটাও জানি না। আমরা রাজ্যপালের মুখপাত্র নই। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবেই বুদ্ধদেব ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।’