এই সময়, বেলঘরিয়া: ভোটপ্রচারে বেরিয়ে বর্ধমান-দু্র্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদকে প্রবল অস্বস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল। দুর্গাপুরে প্রার্থীর সামনেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন দলের দুই গোষ্ঠী। রবিবার প্রায় একইরকম ঘটনার সাক্ষী থাকলেন দমদম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত। প্রচারে শীলভদ্রের উপস্থিতিতেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন দলের কর্মীরা।বাড়ি বাড়ি প্রচার কর্মসূচিতে মিছিলের সামনের সারিতে কে বা কারা থাকবেন তা নিয়ে বিজেপির আভ্যন্তরীণ গণ্ডগোলের ঘটনায় রবিবার সকালে উত্তেজনা ছড়ায় বেলঘরিয়া বাদামতলা সংলগ্ন পূর্ব পাড়া এলাকায়। যদিও ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই প্রচার মিছিলে থাকা দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গেই পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনেন। গণ্ডগোল বেশিদূর গড়াইনি।
যদিও হাতাহাতির কথা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের দাবি, সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেই তা মিটে গিয়েছে। রবিবার বেলঘরিয়া বাদামতলা সংলগ্ন পূর্বপাড়া মোড় থেকে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সুসজ্জিত মিছিল শুরু করেছিলেন দমদমের বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত। কর্মীদের হাতে ছিল বেলুন। সঙ্গে ঢাকের বাদ্যি। মিছিলের একেবারে সামনে ছিলেন শীলভদ্র।
কয়েক কদম এগোতেই বাধে বিপত্তি। কয়েকজন প্রার্থীর পিছনে হাতে হাত রেখে ব্যারিকেড করে এগোতে থাকেন। তা দেখে পিছনের লোক ধাক্কা দিয়ে সেই ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। প্রথমে তর্ক, তারপর হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দলের কর্মীরা। প্রবল অস্বস্তিতে পড়েন শীলভদ্র দত্ত। যদিও মিছিলে থাকা দলেরই কিছু নেতা-কর্মী পরিস্থিতি সামাল দেন।
ফলে গন্ডগোল বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এ দিন কামারহাটি পুরসভার ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে বাদামতলায় গিয়েই শেষ হয় বিজেপির প্রচার মিছিল। বিরোধীদের কটাক্ষ, যারা ক্ষমতায় না এসেই মারপিট শুরু করেছে, তারা ক্ষমতায় এলে কী হবে? সিপিমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘দমদমে যিনি বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন, তিনি তো আগে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন। ফলে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না দলের পুরোনো কর্মীরা। তাই যা হওয়ার তাই হচ্ছে। যত দিন যাবে তত প্রকট হবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।’
কামারহাটির পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা গোপাল সাহা বলেন, ‘বিজেপির সংগঠনে নতুন ও পুরোনোর দ্বন্দের ফল। বিষয়টি ওদের নিজস্ব ব্যাপার হলেও বাংলার মানুষ সব দেখছেন। বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হবে মানুষের।’ এ দিন বিজেপির প্রচার মিছিলে ছিলেন বিজেপির কামারহাটি বিধানসভার আহ্বায়ক শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কোনও হাতাহাতির ব্যাপার হয়নি। সংবাদমাধ্যমে প্রার্থী ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় কে পাশে দাঁড়াবে তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এর বাইরে কিছুই ঘটেনি।’
বিজেপির দাবি, হার নিশ্চিত জেনে এখন অপপ্রচার করছে তৃণমূল এবং সিপিএম।