• তল্লাশির আগেই থানায় আধিকারিকরা : NIA, 'লোকেশন নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি', পালটা পুলিস!
    ২৪ ঘন্টা | ০৮ এপ্রিল ২০২৪
  • পিয়ালি মিত্র ও বিক্রম দাস: ভূপতিনগরকাণ্ডে এবার নয়া মোড়। NIA সূত্রে দাবি, তল্লাশি শুরু হওয়ার আগেই NIA এক অধিকারিক থানায় পৌঁছেছিলেন। ডিউটি অফিসারের কাছে পুলিস ফোর্স চেয়েছিলেন। এরপর ৫টি লোকেশনে তল্লাশি শুরু হয়। ভোর সাড়ে ৪টের আগেই থানায় পৌঁছেছিল NIA। তল্লাশি চালাতে প্রায় ৩০ জন CRPF নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ৬টি টিম ছিল ব্যাক আপে। একটি CRPF ফোর্সও রাখা ছিল। মোট 8টি গাড়ি ছিল এই অপারেশনের জন্য। গন্ডগোল শুরু হওয়ার পর সেই ফোর্স ডাকা হয়েছিল ঘটনাস্থলে। ভোর সোয়া ৬টা নাগাদ যখন আক্রমণ হয়, তার অনেক আগেই NIA-এর তরফে থানায় জানানো হয়েছিল যে, তারা তল্লাশি চালাতে এসেছে।যদিও এনআইএ-র এই দাবি পালটা দাবি করেছে আবার জেলা পুলিস। জেলা পুলিস সূত্রে পালটা দাবি, ভোর ৫টার পর এনআইএ-এর একটি দল থানায় আসে। লিখিতভাবে ৫ লোকেশনে তল্লাশির কথা জানায়। কিন্তু নির্দিষ্ট কোন কোন লোকেশন, সেটা উল্লেখ করা হয়নি। জেলা পুলিসের আরও দাবি, যখন তারা সহযোগী টিম দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই খবর আসে হামলার ঘটনার। জেলার পুলিসের বক্তব্য, একটি টিম থানায় ভোরবেলা এলেও, ৩টের মধ্যে গ্রামে ঢুকে যায় কয়েকটি দল। আর ভোর ৪টে নাগাদ লোকেশনে (অর্থাৎ মনোব্রত,বলাইদের বাড়িতে) পৌঁছে যায় এনআইএ টিম। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ডিসেম্বরে ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামের রাজকুমার মান্নার দোতলা বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রাণ হারান ৩ জন। হাইকোর্টের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্ত করছে NIA। শনিবার ভূপতিনগর বিস্ফোরণের কাণ্ডের তদন্তে পূর্ব মেদিনীপুরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের মতো ভূপতিনগরেও তল্লাশি চলাকালীন আক্রান্ত হন এনআইএ অফিসাররা। অভিযোগ, NIA আধিকারিকদের উপর চড়াও হন গ্রামবাসীদের একাংশ। স্রেফ ইটবৃষ্টি নয়, ভাঙচুর চলে গাড়িতেও।পালটা NIA-র বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন ধৃত তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানার স্ত্রী। ভূপতিনগর থানায় এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন ধৃত তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানার পরিবার। এফআইআর দায়ের করে সেই ঘটনার তদন্তও শুরু করে দিয়েছে পুলিস। যার প্রেক্ষিতে বিবৃতি জারি করে এনআইএ দাবি করেছে,"যা অভিযোগ উঠেছে, সবই মিথ্যা। NIA-র ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে।" বিবৃতিতে উল্লেখ, "হাইকোর্টের নির্দেশে ভূপতিনগর বিস্ফোরণের তদন্ত করছে NIA। আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। শনিবার নাড়ুয়াবিলা গ্রামে গিয়ে বিনা প্ররোচনায়, অপ্রত্যাশিতভাবে হামলার মুখে পড়েন সংস্থার আধিকারিকরা। তাঁদের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের উপস্থিতির ৫ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। এরপর ধৃত মনোব্রত জানাকে যখন স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন NIA আধিকারিকদের উপর হামলা চালানো হয়। এক আধিকারিক আহত হন। হামলায় একটি সরকারি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  স্থানীয় থানায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।"ইতিমধ্যে এফআইআর-এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনা এনআইএ-র। গোটা বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে সদর দফতরে জানিয়েছে এনআইএ। এনআইএ সূত্রে, খবর গোটা বিষয়ে দিল্লি সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি,  আজ দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবে তৃণমূল ১০ সদস্যের দল। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও তৃণমূল। এজেন্সির অপব্যবহার, রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলার প্রস্তুতি রাজ্যের শাসকদলের। উল্লেখ্য, শনিবারের পর রবিবারই তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে রীতিমতো কাগজ দেখিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি দাবি করেন, ২৬ মার্চ  NIA-এর  এসপি পদমর্যাদার আধিকারিক ধনরামের বাড়িতে বৈঠক করেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তৃণমূল নেতাদের তালিকা দেন তিনি। একই সঙ্গে কুণাল ঘোষের দাবি, একটি সাদা রঙের প্যাকেটও এনআইএ-এর ওই অফিসারকে দেন বিজেপি নেতা।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)