প্রদ্যুৎ দাস: "টাকা রাখ। তৃণমূলের ঝান্ডা ধরবি।" তৃণমূলে যোগদান করাতে আদিবাসী পঞ্চায়েত সদস্যাকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডিল দিয়ে প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে। টাকার ছবি সহ কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের সিপিআইএমের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তবে অভিযোগ পাওয়া মাত্র রাতেই কোতোয়ালি থানার পুলিস পৌঁছে টাকার বান্ডিল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিস।জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন করলা ভ্যালি চা-বাগানের চা শ্রমিক রুবিনা মুন্ডা। তিনি ওই চা বাগান থেকে সিপিআইএম দলের একজন নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যা। অরবিন্দ গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্যা তিনি। সিপিআইএমের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই রুবিনাকে তৃণমূলে যোগদান করানোর জন্য বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। কিন্তু তিনি চাপের মুখে নতি স্বীকার করেননি। অভিযোগ, এরপর রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ রুবিনার বাড়িতে দলবল নিয়ে চড়াও হয় কৃষ্ণ দাস, রাজা মন্ডল, প্রধান হেমব্রম সহ জনা ৩০ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। রুবিনার বাবা-মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হুমকি দেয় দুষ্কৃতীর দল। তারপর টাকার বাণ্ডিল ছুঁড়ে তৃণমূলে যোগদানের জন্য চাপ দেয়।দুষ্কৃতীর দল জোর করে রুবিনার বাবা সরকারী শ্রী মোহন মুন্ডার ঘরে ঢুকে পড়ে এবং তাদের বিছানায় ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল ফেলে দিয়ে চিৎকার করে বলে,“আমরা তোদের টাকা দিচ্ছি। আমাদের নির্দেশ মতো কাল তৃণমূলের ঝান্ডা ধরবি। নইলে বিপদ আছে।" এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন রুবিনা। তিনি বিষয়টি স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব জানান। রাতেই জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সিপিএম প্রার্থী। তারপর থেকেই রুবিনা মুন্ডা বাড়িতে না থেকে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল রাতে তৃণমূলে যোগদানের জন্য হুমকি দেওয়ার পর তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ। বাড়িতে ফিরতে চেয়ে আবেদন করেছেন সিপিআইএম-এর পঞ্চায়েত সদস্যা রুবিনা মুন্ডা। এই ঘটনায় সিপিএম প্রার্থী দেবরাজ বর্মন তোপ দাগেন, "ধমক চমকে কাজ হয়নি। এখন তাই ভোটের মুখে একজন বামপন্থী আদিবাসী মহিলা জন প্রতিনিধিকে টাকার প্রলোভন দিয়ে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেতারা। তার বাড়িতে গিয়ে টাকার বান্ডিল দিয়ে এসেছে। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করলাম। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের দারস্থ হয়েছি। পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেছে। যথাযথ ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।" যদিও বিষয়টিকে সাজানো ঘটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, "তৃণমূলের অবস্থা এতটা করুণ হয়ে যায়নি যে সিপিআইএম নেতাকে টাকা দিয়ে দলে আনতে হবে। আসলে তৃণমূলকে বদনাম করার জন্য সিপিআইএম-ই এই কাজ করেছে। কিন্তু লাভ হবে না। মানুষ তৃণমূলের পক্ষে রয়েছে।" ওদিকে গোটা ঘটনায় বিজেপি নেতা শ্যামাপ্রসাদ তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করে বলেন, "এটা সিপিআইএম এবং তৃণমূলের ভোট প্রচারের কৌশল।"