হিন্দু বিয়েতে কন্যাদান বাধ্যতামূলক নয়, পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের
এই সময় | ০৮ এপ্রিল ২০২৪
হিন্দু পরিবারে মেয়ের বিয়ের ক্ষেত্রে কন্যাদানের নিয়ম প্রচলিত। প্রতিটি মেয়ের জীবনে এই মুহূর্তটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেকক্ষেত্রেই যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই নিয়ম নিয়ে আপত্তিও তোলা হয়। এবার কন্যাদান প্রথা নিয়ে উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি মামলায় রায় দেওয়ার সময় পর্যবেক্ষণে জানায়, বিয়েতে কন্যাদানের নিয়ম পালন বাধ্যতামূলক নয়।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী গত ২২ মার্চ একটি মামলার রায়দানের সময় পর্যবেক্ষণে কন্যাদান বাধ্যতামূলক নয় বলে উল্লেখ করেন। মামলাকারী কন্যাদান বিয়ের নিয়মের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং বাধ্যতামূলক বলে যুক্তি পেশ করার চেষ্টা করেন। মামলাকারীর বক্তব্য, বিয়েতে কন্যাদানের নিয়ম পালন করা হয়েছে কি না, তার সপক্ষে সাক্ষীর প্রয়োজন। এই মামলার রায়দানের সময়ই আদালত উল্লেখ করে, হিন্দু বিয়ের সময় কন্যাদানের নিয়ম পালন বাধ্যতামূলক নয়। কন্যাদান হয়েছে না হয়নি, তা কোনও মামলার কোনও রায়কেই প্রভাবিত করবে না।
হাইকোর্টের রায়হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৫-এর সেকশন ৭ অনুযায়ী, কোনও হিন্দু বিয়ের বৈধতার জন্য সপ্তপদীর নিয়ম মানা জরুরি। হিন্দু বিয়ের সময় এই সপ্তপদীর নিয়ম পূরণ করা হয়। একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা অগ্নিসাক্ষী রেখে সাতপাক ঘুরে একে অপরের সঙ্গে সাত অঙ্গীকারে আবদ্ধ হন তখন সেটিকে বৈধ হিন্দু বিয়ের তকমা দেওয়া হয়। ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী কন্যাদানের রীতি পালনের কোনও উল্লেখ নেই।
কেন পালিত হয় কন্যাদান?প্রায় সকল হিন্দু পরিবারেই বিয়ের ক্ষেত্রে কন্যাদানের নিয়ম পালন করা হয়। মেয়ের বাবা-মা এই নিয়ম পালন করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এই নিয়ম অনুযায়ী, বাবা নিজের মেয়ের হাত হবু জামাইয়ের হাতে তুলে দেন। মন্ত্র উচ্চারণের মধ্যে দিয়ে কন্যাদান করেন। মেয়ের দায়িত্ব জামাইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার এই রীতিটিই কন্যাদান হিসেবে পরিচিত।