পশ্চিবঙ্গে এনআরসি মাধ্যমে মুসলমান সমাজের উপর কোনও অত্যাচার হলে ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া দেওয়া হবে, বিদায়ী কেন্ত্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের কাছে এল এমনই হুমকি চিঠি। এমনকী ওই চিঠির প্রেরক নিজেকে লস্কর ই তইবার সদস্য বলেও দাবি করেছে। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নজরে আনবেন বলে জানান শান্তনু ঠাকুর।ওই চিঠিতে শান্তনু ঠাকুরের উদ্দেশে লেখা হয়েছে, 'পশ্চিমবংলায় যদি এনআরসি হয় এবং এনআরসি-র ফলে যদি মুসলমানদের উপর কোনওরকম অত্যাচার হয়, তাহলে পশ্চিমবাংলা তথা সমগ্র ভারত জ্বলবে এবং আপনাদের ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে। কেউ আপনাদের ঠাকুরবাড়ি বাঁচাতে পারবে না। লস্কর ই তইবার নাম শুনেছেন তো, আমরা লস্কর ই তইবার সদস্য।' চিঠির নীচে প্রেরকের নাম ও ঠিকানাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা ঠাকুরবাড়ি তথা মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে। এই প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুর বলেন, 'আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জানাব, কেস করব এটা নিয়ে, এই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের কী অবস্থা, কী দুরবস্থা, সেটা আমি জানতে চাই, এবং কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী - স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। সংবাদমাধ্যম দ্বারা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে অবগত করলাম, আপনি পুলিশমন্ত্রী হওয়ার পরেও, এইরকম লস্কর ই তইবার মাধ্যমে হুমকি আসে একজন প্রাক্তন মন্ত্রী - একজন প্রাক্তন সাংসদের বাড়িতে।' যদিও পালটা মমতাবালা ঠাকুরের দাবি, এই চিঠির ঘটনা শান্তনু ঠাকুরই লোক দিয়ে করিয়েছেন। ঘটনায় উপযুক্ত তদন্তও চেয়েছেন তিনি।
আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জানাব, কেস করব এটা নিয়ে, এই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের কী অবস্থা, কী দুরবস্থা, সেটা আমি জানতে চাই।শান্তনু ঠাকুর
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের অভিযোগকে কেন্দ্রে করে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যেখানে মমতাবালা ঠাকুর শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে বড়মা বীণাপানিদেবীর ঘর ও মন্দির ভাঙার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করে দেখেমি এই সময় ডিজিটাল। এই বিষয়ে গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মমতাবালা। পালটা শান্তনু ঠাকুরে অবশ্য দাবি, ওই ঘরের সঙ্গে স্বর্গীয় পি আর ঠাকুর, বড়মা বীণাপানি দেবীর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। তাই ওই ঘর কারও একজনের কুক্ষিগত হয়ে থাকা ঠিক নয়। ভক্তরা ওই ঘর হেরিটেজ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছেন। আর ভক্তদের সেই দাবিকে সমর্থনও জানিয়েছেন শান্তনু।
আর এই ঘরের 'দখল'কে কেন্দ্র করে যখন ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে, ঠিক সেই সময় এই হুমকি চিঠির ঘটনায় নতুন করে ছড়াল চাঞ্চল্য।