তীব্র গরমের পরে দক্ষিণবঙ্গে সবে দেখা দিয়েছে কালবৈশাখী। দিন দুই আকাশ মেঘলা। কোথাও হালকা বৃষ্টিও হয়েছে। নেমেছে তাপমাত্রা। বহুদিন পর এ রকম ‘আবগারি’ ওয়েদার দেখে অনেকেই ভাবছেন, একটা পার্টি তো হতেই পারে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। এ রকম কোনও প্ল্যান থাকলে সতর্ক হোন। নইলে পস্তাতে হবে। জেলের ঘানিও টানতে হতে পারে।
রাজ্য আবগারি দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, লোকসভা ভোটের জন্য যত্রতত্র মদ খাওয়ার উপর কড়া বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। সরকার অনুমোদিত বার ছাড়া অন্য কোথাও বসে মদ খাওয়ার আগেও পাঁচবার ভাবুন। নিজের ঘরে বসে কিংবা ফ্ল্যাটে বন্ধুদের সঙ্গে ককটেল পার্টি করলেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচজনের বেশি একসঙ্গে বসে কোথাও মদ খেতে হলে অস্থায়ী বার লাইসেন্স নিতে হবে। তা না হলে পুলিশ চাইলে জেলে পাঠাতেই পারে।
ভোটের সময়ে ওপেন প্লেসে মদ খাওয়া নিয়েও সাবধান করছেন আবগারিকর্তারা। বার-রেস্তরাঁ ছাড়াও রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে অজস্র মদের দোকান রয়েছে। অনেক জায়গায় মদের দোকানের বাইরে টেবিল-চেয়ার পাতা থাকে। দোকান থেকে মদের বোতল কিনে এনে সেখানে বসে অনেকেই মদ্যপান করেন। ভোটের বাজারে সেটা করতে গেলে কিন্তু বিপদ হতে পারে।যতদিন না ভোট শেষ হচ্ছে, ততদিন গাড়িতে মদের বোতল নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক করছেন আবগারিকর্তারা। কারণ, কমিশনের নির্দেশিকা মেনে এখন সর্বত্রই নাকা চেকিং চলছে। সেই চেকিং য়ের সময়ে যদি গাড়িতে মদের বোতল মেলে এবং সেই বোতলের রসিদ না থাকলে হয়রানির শেষ থাকবে না। রসিদ দেখাতে না পারলে মদের বোতল আটক করা হবে। গাড়িতে বসে মদ খেলেও ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ।
এই বিধিনিষেধের জেরে একদিকে যেমন সুরাপ্রেমীরা সমস্যায় পড়ছেন, তেমনি মাথায় হাত পড়েছে ওয়াইন শপের মালিকদের। বঙ্গীয় হোটেল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড লাইসেন্সি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অচিন্ত্য বসু বলেন, ‘যাঁরা অফ শপ থেকে মদ কেনেন, তাঁদের কারও কাছে রসিদ থাকে না। ভিড়ের সময়ে সবাইকে রসিদ দেওয়া সম্ভবও হয় না। এ রকম কড়াকড়ি করলে লোকে দোকান থেকে মদ কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরবে কী করে?’
কমিশনের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা, লোকসভা ভোটে মদ ও মাদকের অপব্যবহার ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। সেই মতো আবগারি দপ্তর, নারকোটিক্স বিভাগ এবং রাজ্য পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভোটের সময়ে মদ খাওয়ার উপর নির্বাচন কমিশন থেকে কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপায়নি। এ সংক্রান্ত যে সব সরকারি আইন ও নির্দেশিকা রয়েছে, সেগুলিই মেনে চলার কথা জানানো হয়েছে।’