সোমবার গোটা রাত দিল্লির মন্দির মার্গ থানাতেই আটক রইল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। থানার অন্দরে এখনও অবস্থানে অনড় দোলা সেন, শান্তনু সেন, ডেরেক ও'ব্রায়েন, সাগরিক ঘোষ, অর্পিতা ঘোষ সহ ১০ জনের প্রতিনিধি দল। দলীয় সূত্রে খবর, রাতে তাঁদের খোঁজ নিতে ফোন করেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত অবস্থান চলবে। কমিশনের বাইরে অবস্থান করতে পারিনি, থানাতেই কর্মসূচি চালাবেন বলে জানিয়েছেন দোলা সেন। মঙ্গলবার সকালে মন্দির মার্গ থানার অন্দরেই 'আমরা করব জয়' গান গাইতে দেখা যায় তাঁকে।
কী দাবি তৃণমূলের?তৃণমূলের দাবি, ভোটের আদর্শ আচরণবিধির কারণে ঠিক যেভাবে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন বা রাজ্য এজেন্সিগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। তেমনই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিগুলির উপরও তাদেরই কর্তৃত্ব থাকুক।
দিল্লির আঁচ সোমবার রাতে কলকাতাতেও এসে পৌঁছয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কুণাল ঘোষ, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, মালা রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শশী পাঁজা, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসরা রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন।
সেখান থেকে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, “এনআইএর এসপির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ ছিল। জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে গোপনে বৈঠক হয়েছে এসপি এনআইএ-র। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করব। যে ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, এসপি’র ঘরে জিতেন্দ্রকে একজন নিয়ে যাচ্ছেন। বেরনোর সময় নীচ পর্যন্ত এগিয়ে দিচ্ছেন।” মূলত এই অভিযোগকে সামনে রেখেই এনআইয়ের ডিরেক্টর বদলের পক্ষে সওয়াল করেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। নির্বাচন কমিশনের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস দাবি জানায়, ED, CBI, NIA এবং আয়কর দফতর, এই চার কেন্দ্রীয় এজেন্সির প্রধানকে অবিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে। এই মর্মে একটি ছয় পাতার মেমোরেন্ডাম দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
দিল্লিতে তৃণমূলের ধরনা ঘিরে ধুন্ধুমারসোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে কমিশন কর্তাদের সঙ্গে। সাক্ষাতের পর কমিশনের সদর দফতরের বাইরে এসে প্ল্যাকার্ড-পোস্টার হাতে ধরনায় বসে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। ২৪ ঘণ্টা ধরনার ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, অভিযোগ ওঠে দিল্লি পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলে। ডেরেক ও'ব্রায়েন, দোলা সেন, শান্তনু সেন, সাগরিকা ঘোষ সহ সকলকেই মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কমিশনরে কাঠগড়ায় তুললেন অভিষেকদিল্লির এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাতেই রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির ঘটনায় কমিশনকে দায়ী করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘এটা গণতন্ত্রের কালো দিন। কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট' আচরণ করছে।'