ফ্লেক্স-ব্যানার নিষিদ্ধ হোক, চাইছেন পরিবেশকর্মীর দল
এই সময় | ০৯ এপ্রিল ২০২৪
মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ‘বেনজির’ ঘোষণা সত্ত্বেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন পরিবেশকর্মীর দল। অতীতে বহুবারই তো ভোট হয়েছে এদেশে। এর আগে কোনও মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারই এমন ভাবে ফ্লেক্স, ব্যানার বা ফেস্টুন ব্যবহারের পর সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার এমন নির্দেশ দেওয়ার সাহস দেখাতে পারেননি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব করে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার রাজীব কুমার।জানিয়েছেন, নির্বাচনে কার্বন ফুটপ্রিন্ট যাতে ন্যূনতম থাকে তার জন্য দেড় মাসের নির্বাচনপর্ব মিটে যাওয়ার পর পথে-ঘাটে সর্বত্র প্রচারমাধ্যমের উপকরণগুলো অবহেলায়, অনাদরে সর্বত্র ছড়িয়ে থাকবে, এমনটা বরদাস্ত করা হবে না। দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে প্রচারের ওই সব সামগ্রী। সেই প্রেক্ষিতেই পরিবেশকর্মীরা প্রশ্ন তুলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে অত্যন্ত ক্ষতিকর পলিভিনাইল ক্লোরাইড দিয়ে তৈরি এমন ফ্লেক্সের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করাই বা হবে না কেন?
নির্বাচনী প্রচারকে পরিবেশবান্ধব করার প্রয়াস এ দেশে হয়েওছে। কেরালার বিভিন্ন নির্বাচনের পর রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে যাবতীয় প্রচার-সামগ্রী সরিয়ে ফেলা হয়। প্রচারে ব্যবহার করা হয় পরিবেশবান্ধব সামগ্রীও। কেরালায় সারা বছর প্রচুর বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা থাকে। যাতে ব্যানার-ফ্লেক্স দৃশ্যদূষণের কারণ না হয়, তার জন্যই রাজনৈতিক কর্মীরা সচেতন, মনে করেন অনেকে। কিন্তু কেরালায় যে ঘটনা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ঘটে, তেমনটা গোটা দেশে ঘটে না।
রাজ্যের পরিবেশকর্মী সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলছেন, ‘আমাদের নির্বাচনী প্রচার এখনও সেই পুরোনো যুগেই পড়ে রয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন, ফ্লেক্স এবং লাউডস্পিকার — প্রচারের জন্য যা কিছু ব্যবহার করা হয়, তার কোনওটাই পরিবেশবান্ধব নয়। কোনও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইস্তেহারেও তো পরিবেশরক্ষাকে জায়গা পেতে দেখি না। তবু কোনও কিছু না করার চেয়ে কমিশনারের এই উদ্যোগ অবশ্য প্রশংসনীয়।’
পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলছেন, ‘সবচেয়ে ভালো হয় প্রচারের সময়ে ফ্লেক্স-ব্যানার জাতীয় জিনিসের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া। তবে একদিনে তো এমন হবে না, ততদিন এদের সহজেই রিসাইকল করা সম্ভব। সুতরাং নির্বাচনের পর্ব মিটে গেলে রাজনৈতিক দলগুলো যাতে নিজেদের ফ্লেক্সের দায়িত্ব নিজে নেয়, সেই দিকে নজর দেওয়া হোক।’
পুজোর সময়ে বিভিন্ন কমিটি তাদের প্রচারের জন্য গোটা শহরকে মুড়ে দেয় নানা ব্যানার ও ফ্লেক্সে। সেই বিষয়ে সরব হয়েছিলেন পরিবেশকর্মী সোমানি সেন দুয়া। কয়েক মাস পরে নির্বাচনী প্রচারে সেই ফ্লেক্স, ব্যানার ব্যবহার নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের এমন ঘোষণা প্রসঙ্গে সোমানি বলছেন, ‘আগামী দিনে কখনও হয়তো ফ্লেক্সের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। এবারের ঘোষণা সেই পথেই প্রথম পদক্ষেপ। কোনও একজন তো সাহসের সঙ্গে এমন রাস্তায় হাঁটলেন। এটাই অনেক।’