• ফেক এনকাউন্টার মামলায় আপাতত জেলে নয়, সুপ্রিম-স্বস্তি প্রদীপের
    এই সময় | ০৯ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: বম্বে হাইকোর্ট ২০০৬-এর একটি ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যার মামলায় মহারাষ্ট্র পুলিশের কুখ্যাত ‘এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট’ ইনস্পেক্টর প্রদীপ শর্মাকে যাবজ্জীবন কারদণ্ডের নির্দেশ দিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিল। ১৯ মার্চের সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন প্রদীপ।সোমবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি হৃষীকেশ রায় ও বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রর বেঞ্চ মহারাষ্ট্র সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস ইস্যু করে প্রদীপকে আপাতত আত্মসমর্পণ থেকে রেহাই দিল। আপাতত হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

    যে মামলায় প্রদীপ-সহ ১৩ পুলিশকর্মীর যাবজ্জীবন সাজার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট, তাতে দায়রা আদালতে খালাস পেয়েছিলেন প্রদীপ।

    মহারাষ্ট্র সরকার খালাসের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করেছিল হাইকোর্টে। দীর্ঘ শুনানির পর বিচারপতি রেবতী মোহিতে দেড়ে এবং বিচারপতি গৌরী গডসের বেঞ্চ ২০০৬-এ ভারসোভায় রামনারায়ণ গুপ্তা ওরফে লখন ভাইয়ার হত্যার ঘটনায় প্রদীপকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়। একদা ছোট রাজনের ঘনিষ্ঠ লখনকে তার বিরোধী গোষ্ঠীর সুবিধার জন্যে প্রদীপের নেতৃত্বে পুলিশ সাজানো সংঘর্ষে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছিল বলে পর্যবেক্ষণে জানায় হাইকোর্ট।

    ওই হত্যার ঘটনায় পুলিশ রিপোর্টও অবশ্য প্রথমে পুলিশকে ক্নিনচিট দিয়েছিল। পরে ২০০৯ সালে বম্বে হাইকোর্টই রামনারায়ণের দাদা রামপ্রসাদের আর্জির ভিত্তিতে ডিসিপি কেএম প্রসন্নর নেতৃত্বে সিট গঠন করে পুনর্তদন্তের নির্দেশ দেয়। সিট-এর রিপোর্টে প্রদীপকেই হত্যার মাস্টারমাইন্ড বলে চিহ্নিত করা হয়।

    কিন্তু দায়রা আদালত ২০১৩-র জুলাইয়ে প্রদীপকে আশ্চর্যজনক ভাবে খালাস করে। এমনকী লখন ভাইয়ার মাথা থেকে উদ্ধার বুলেটটি যে প্রদীপের আগ্নেয়াস্ত্রেরই, সেই ব্যালিস্টিক রিপোর্টও অগ্রাহ্য করে দায়রা আদালত। যা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে হাইকোর্ট। এমনিতে প্রদীপ তাঁর চাকরিজীবনের ২৫ বছরে ভুয়ো সংঘর্ষের ১১২টি ঘটনায় অভিযুক্ত।

    আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগসাজশ এবং তিন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি করার অভিযোগে ২০০৮-এ একদফা চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েও পুনর্বহাল হয়েছিলেন। ২০২১-এ আম্বানিদের বাড়ি অ্যান্টিলায় বোমাতঙ্ক ছড়ানো এবং তার পর-পরই মনসুখ হিরন হত্যাতেও তিনি অভিযুক্ত।

    প্রদীপের হয়ে শীর্ষ কোর্টে সওয়ালে দুই বর্ষীয়ান আইনজীবী মুকুল রোহাতগি ও সিদ্ধার্থ লুথরা দাবি করেন, প্রদীপ লখন ভাইয়ার হত্যাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না, শুধু তাঁর রিভালবারটি ব্যবহৃত হয়েছিল! সুপ্রিম কোর্টে পর্যবেক্ষণে জানায়, বম্বে হাইকোর্টের রায় সব দিক খতিয়ে দেখেই দেওয়া। তবু অন্তর্বর্তী নির্দেশে প্রদীপকে আপাতত আত্মসমর্পণ থেকে রেহাই দিয়েছে বিচারপতি রায় ও বিচারপতি মিশ্রর বেঞ্চ।
  • Link to this news (এই সময়)