লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গের কৃষ্ণনগর আসন থেকে লড়ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্র। গত বছর টাকার বিনিময়ে প্রশ্নের মামলায় সংসদ থেকে বহিষ্কৃত হন মহুয়া। নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে ক্রমাগত কেন্দ্রের শাসক দলকে আক্রমণ চালাচ্ছেন সংসদ থেকে নিজের বহিষ্কার ইস্যুতে। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করার পিছনে রয়েছে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। এই আবহে মহুয়ার বিরুদ্ধে আইনজীবী তথা এককালের মহুয়ার বন্ধু জয় অনন্ত দেহদরি একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন, যার ভিত্তিতে দিল্লি হাইকোর্ট জানালো আত্মপক্ষ সমর্থন করা থেকে আটকানো যাবে না মহুয়াকে। পাশাপাশি জনসমক্ষে একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুড়ির নিন্দা করেছে দিল্লি হাইকোর্ট।আইজীবী জয় অনন্ত দেহদরির আবেদনের নিষ্পত্তিকালে হাইকোর্টের বেঞ্চ মৌখিক ভাবে এই মন্তব্য করেছে। আইনজীবী জয় অন্তত দেহদরির অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে 'অবমাননাকর' মন্তব্য করেছেন মহুয়া। মহুয়া যাতে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন তার জন্য আদালতের নির্দেশ চেয়ে আবেদন করেছিলেন জয়। অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন ইস্যুতে সংসদ থেকে বহিষ্কার হওয়া মহুয়ার বিরুদ্ধে মানহানিকর বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগে জয় ২ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন আদলতে।
উল্লেখ্য, মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে শিল্পপতি তথা ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে উপহার ও টাকার বিনিময়ে সংসদে শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিষয়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি সাংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ডও দর্শনকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত বছর ৮ ডিসেম্বর সংসদ থেকে বহিষ্কৃত হন মহুয়া। খারিজ হয়ে যায় তাঁর সাংসদ পদ।
বিচারপতি প্রতীক জালান শুনানি চলাকালীন জয়কে বলেন, 'আপনি যদি প্রকাশ্যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তবে তাঁরও আত্মপক্ষ সমর্থন করার অধিকার রয়েছে। তাছাড়া তিনি বস্তুনিষ্ঠভাবে মিথ্যা বিবৃতি দিতে পারবেন না। দুই পক্ষই যদি বলে যে আমরা এই লড়াইকে পাবলিক ডোমেইনে রাখব না তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু আপনি যদি জনসমক্ষে কারও বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন তবে তাঁরও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাওয়া উচিত।' তবে মহুয়ার আইনজীবীকেও সতর্ক করেছে আদালত। আদালত জানিয়েছে, তৃণমূল নেত্রী সতর্ক থাকতে হবে কোনও বিবৃতি দেওয়ার সময়। কোনও মিথ্যা বিবৃতি দিলে তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করা হবে করা জানিয়েছে আদালত। আদালত জানিয়েছেন, মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি যদি পাবলিক ডোমেনে করা হয়ে থাকে তবে তাঁরও আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার রয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৫ এপ্রিল। তবে জয় ও মহুয়ার একে অপরের বিরুদ্ধে পাবলিক ডোমেনে কাদা ছোড়াছুড়ির নিন্দা করেছে আদালত।