Kolkata Municipality : প্লাস্টিকের ফ্লেক্স ও ব্যানার রিসাইকল করবে কলকাতা পুরসভা
এই সময় | ০৯ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: শহর জুড়ে এখন প্লাস্টিকের ব্যানার, হোর্ডিংয়ের ছড়াছড়ি। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ব্যবহৃত এই সামগ্রীগুলি পরিবেশের পক্ষে ভীষণই ক্ষতিকর। শুধু বাতাস নয়, জলও দূষিত করে এগুলি। সে-কারণেই এই ধরনের দূষণ সৃষ্টিকারী সামগ্রীগুলিকে নির্বাচন শেষে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর।পুরসভা সূত্রে খবর, নির্বাচন পর্ব শেষ হলে হাওড়ার একটি সংস্থার মাধ্যমে ভোটের বর্জ্যকে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে। ওই সংস্থার সাহায্যেই তৈরি হবে নতুন জিনিস। কী তৈরি হবে ভোট বর্জ্য দিয়ে? বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ সাধন ঘোষ বলেন, ‘ভোটের হোর্ডিং, ব্যানার ব্যবহার করে প্লাস্টিকের চেয়ার, টেবিল, ফুলদানি থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি সম্ভব।’
তবে উৎসেই এগুলি পৃথকীকরণ করা জরুরি বলে জানাচ্ছেন সাধন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারে পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। দূষণ ছড়ায় এমন ধরনের জিনিস কম ব্যবহার কথাও বলেছে কমিশন। শব্দ দূষণের ক্ষেত্রেও সরকারি গাইডলাইন মানার অনুরোধ করা হয়েছে প্রত্যেককে।
তবে এই নিয়ে অবশ্য শাসক বা বিরোধী কোনও শিবিরেরই তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দমদম কেন্দ্রের বাম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘শুধু একা একজন প্রার্থী পরিবেশ নিয়ে সচেতন হলেই হবে না। সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে সমস্যা মেটার নয়।’
কেরালায় বিধানসভা নির্বাচনে কয়েক বছর আগে পরিবেশবান্ধব প্রচার দেখা গিয়েছিল। সেখানে মূলত পাট দিয়ে তৈরি জিনিসকে প্রচারে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ডিজিট্যাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলি। সেই প্রসঙ্গ টেনে পরিবেশবিজ্ঞানী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যে প্রচারে যে হোর্ডিং বা ফ্লেক্স ব্যবহার হয়, সেগুলি পলিভিনাইল ফ্লোরাইড। প্লাস্টিকজাত। ভোটের পর এসব না সরানোর ফলে এই জিনিসগুলি জলাশয়ে মিশে যেমন জলজ প্রাণীর ক্ষতি করে, তেমনই নিকাশি নালার মুখও আটকে দেয়। ফলে, এই প্লাস্টিকজাত জিনিস পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করলে পরিবেশের মঙ্গল।’
ভোট মেটার শহরে বেশিরভাগ জায়গাতেই হোর্ডিং-ব্যানার খোলার ব্যাপারে এগিয়ে আসতে দেখা যায় না রাজনৈতিক দলগুলিকে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা প্লাস্টিক রিসাইকল করলে তা ভালো, মনে করছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। অনেক আগেই পুরসভার এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। পুরসভার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ সাধন ঘোষ।
তাঁর কথায়, ‘যেভাবে প্লাস্টিকের পরিমাণ বাড়ছে, তাতে রিসাইকল না করলে দূষণের মাত্রা আরও বাড়বে। তাছাড়া, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কর্মসংস্থান যেমন হবে, তেমনই আয়ও হবে পুরসভার।’